ম.ব.হোসাইন নাঈম, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায়-২০২২-২০২৩ ও আইডি কার্ড বিতরণ আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেঃ) বিকাল ৫ টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে পূস্প্যাধাম পার্টিপ্যালেস এর হলরুমে ঢাকা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক সোনালীর বার্তা’র প্রকাশক ও সম্পাদক শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও এশিয়ার বানী’র প্রকাশক সম্পাদক মোসলেহ উদ্দিন বাচ্চুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ঢাকা প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা দৈনিক আলোর বার্তা’র প্রকাশক সম্পাদক অধ্যাপক রফিক উল্লাহ সিকদার, ওবায়দুল হক খান, লায়ন এম এইচ মারুফ সিকদার।
আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন, প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এইচ মাহফুজ, দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট আলাউদ্দিন, সদস্য এম এ গণি, বিপ্লব পাল, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ জয়নাল আবেদীন ফরাজী সহ প্রমুখ।
বিচারপতি নাসিম বলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল ও সরকার একযোগে সাংবাদিকদের মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের সমস্যা গুলো সরকারের কাছে তুলে ধরেছে প্রতিকারের জন্য এবং সরকারের বক্তব্য ও সাংবাদিকদের নিকট পৌঁছানো হয়। প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের জন্য আইন সংস্কারের সুপারিশ করা হয়। সংসদীয় কমিটির কাছে তা জমা দেওয়ার পূর্বেই সুপারিশ নামায় সাংবাদিক নেতারা সমর্থন ও স্বাক্ষর করেন। সেই আলোকে কাজ চলছে। প্রেস কাউন্সিল এর প্রত্যাশা সাংবাদিকগন গ্রাজুয়েট হবেন অথবা ৫ বছর সাংবাদিক পেশায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রেস কাউন্সিল সারা দেশের সাংবাদিকদের জন্য ডাটাবেইজ তৈরি করবে যেখানে কর্মরত সাংবাদিকদের বিস্তারিত তথ্য থাকবে। ফলে সারা দেশে সাংবাদিক পরিচয়ে কোন ধরনের অপরাধ অথবা সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার সুযোগ পাবে না। কারন ডাটাবেইজ খুললেই সকল সাংবাদিকদের তথ্য পরিচয় জানা যাবে। বর্তমানে মিথ্যা নিউজ করলে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানের সুপারিশ করা হয়েছে।এ আইন নিয়ে সাংবাদিকদের ভয়ের কারণ নেই! প্রেস কাউন্সিল ১৪জন সদস্য দ্বারা গঠিত, তারমধ্যে ৯ জনই সাংবাদিক নেতা।
প্রধান বক্তায় আরও বলেন প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ প্রতিকার এর জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট বিচারিক প্যানেল তৈরি করা হয়। তাতে প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান ও দুই জন সাংবাদিক সদস্য থাকেন। ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু প্রেস কাউন্সিল প্রথম গঠন করেন যেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তিরস্কার এর বিধান ছিলো (৪৮ বছর) পূর্বের। ভারতের প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে এর ও পরে নেপালের প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয়। ভারতের প্রেস কাউন্সিলের আইন বাংলাদেশের প্রেস কাউন্সিল কে অনুসরণ করে গঠন করেছে।
ঢাকা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোসলেহ উদ্দিন বাচ্চু বলেন বাংলাদেশ সরকারের অন্যান্য বাহিনীর মৃত্যু বরণ ও দূর্ঘটনায় আহত বা নিহত হলে রাষ্ট্র তাদের পাশে থাকেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কোন সাংবাদিক দূর্ঘটনা আহত ও নিহত হলে সরকার কিংবা পত্রিকার মালিক কাউকেই তাদের পাশে থাকতে দেখা যায় না। সরকারি কোন কর্মচারী অসুস্থ হলে তাদের নিজস্ব সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে চিকিৎসার যাবতীয় পরীক্ষানীরিক্ষা ও ফ্রি ঔষধ ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয় কিন্তু এই সুযোগ সাংবাদিকদের জন্য নেই এবং সরকারী হাসপাতাল গুলোতে সাংবাদিকদের জন্য কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এই জন্য তিনি জোড় দাবি করেন যেন সকল সাংবাদিকদের জন্য ফ্রি ঔষধ চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়।
সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এই সময় তার বক্তব্যে তিনি বলেন আমরা চাই হলুদ সাংবাদিকতা বন্ধে আইন করা হোক। তিনি দাবি করেন বৃটিশ আমলের গুপ্তচর আইনের অপব্যবহার করে সরকারি কিছু আমলা তথ্য সংগ্রহে বাঁধা সৃষ্টি করে সম্প্রতি প্রথম আলোর একজন সিনিয়র সাংবাদিক কে গুপ্তচর আইনে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়। এছাড়া ও ঢাকা প্রেসক্লাবের সম্পাদকের বক্তব্যের উপর একাত্মা প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান এর নিকট তা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক রফিক উল্লাহ সিকদার বলেন প্রেস কাউন্সিল ও সরকার শুধু পত্রিকার মালিক সংগঠন এর সাথে আলোচনা বৈঠক করলেই হবে না সাংবাদিক সংগঠন গুলোর সাথে ও আলোচনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক নবজীবন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক রিতা আক্তার, ঢাকা প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক স্বাধীনতা সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার মো. নজরুল ইসলাম, দৈনিক গড়ব বাংলাদেশ পত্রিকা’র ব্যুরো চিফ ম.ব.হোসাইন নাঈম, দৈনিক স্বাধীনতা সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার আল আমিন, সাগর ইসলাম রুপন্তর, নজরুল ইসলাম, মহি উদ্দিন রিপন, মোঃ মাহফুজ আলম সকিনা আক্তার সহ প্রেসক্লাবের সকল সদস্যগণ।