বুধবার, ২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

সুবর্ণচরে গৃহবধুকে দলবদ্ধধর্ষণ: ১০ জনের মৃত্যুদন্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন

মো: বেল্লাল হোসাইন নাঈম, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় ১৬ আসামীর মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদন্ড ও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের অর্থদন্ডও করা হয়। 

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে কাঠগড়ায় পনের আসামি উপস্থিত ছিলেন। বাকী আসামি পলাতক।    

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মো. রুহুল আমিন, পিতা মৃত খুরশিদ আলম, মো. হাসান আলী বুলু পিতা মৃত আবদুল হাসেম, মো. সোহেল পিতা মৃত ইসমাইল, স্বপন পিতা মৃত আবদুল মান্নান, ইব্রাহীম খলিল পিতা আবুল কাশেম, আবুল হোসেন আবু পিতা মৃত ছিড়ু মিয়া, মো. সালাউদ্দিন পিতা ফকির আহাম্মদ, মো. জসীম উদ্দিন পিতা মো. মোতাহের হোসেন,  মো. মুরাদ পিতা মো. রফিক ও মো. জামাল হেঙ্জু পিতা মৃত চাঁনমিয়া। 

বাকী যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্তরা হলেন, মো. হানিফ পিতা ইসমাইল প্রকাশ বাগন আলী, মো. চৌধুরী পিতা আবদুল হামিদ, মো. বাদশা আলম পপ্রকাশ কুড়াইলা বাসু পিতা মৃত আহম্মদ উল্যা, মোশারফ পিতা তোফায়েল আহম্মদ তোফা, মো. মিন্টু প্রকাশ হেলাল (পলাতক) পিতা মৃত আরব আলী প্রকাশ গর্দান ও মো. সোহেল পিতা আবুল কালাম। 

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন সকল আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেকের দুই বছরের স্বশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। রায়টি অপরাধীদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। আসামি পক্ষের পাঁচজন সাফাই সাক্ষী প্রদান করে। তবে কোনো সাক্ষীই ভোট কেন্দ্রে পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেনি।

আসামি পক্ষের আইনজীবী হারুনুর রশিদ হাওলাদার বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। বাদী পক্ষের আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রাসুল মামুন বলেন, যুগান্তকারী রায় হয়েছে। অপরাধীদের জন্য এটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। 

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে (৪০) মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী। নির্যাতিত নারীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। ওই ঘটনার পরদিন (৩১ ডিসেম্বর) নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কার হওয়া প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের  বিরুদ্ধে বিগত ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *