মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোয়া কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট

মো. মাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় গ্রাহকের সোয়া কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাকিংয়ের এজেন্ট আক্তারুজ্জামান ওরফে হাসু (৫৫)।

মঙ্গলবার সকালে গ্রাহকরা ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখায় এসে জানতে পারেন অ্যাকাউন্টে টাকা জমা না দিয়ে এজেন্ট আক্তারুজ্জামান কৌশলে গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে পালিয়েছেন। তিনি বোয়ালমারী পৌর সদর বাজারের বাসিন্দা আব্দুর রশীদ মিয়ার ছেলে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, প্রায় তিন বছর ধরে উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ভাটদী বাজারে ইসলামী ব্যাংকের আউটলেট নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন হাসু। সম্প্রতি কয়েকজন গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দেখেন তাদের হিসাবে টাকা জমা হয়নি। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই ব্যাংকের কার্যালয়ে এসে তালাবদ্ধ দেখতে পান  গ্রাহকরা। এসময় নিজেদের জমাকৃত টাকা নিজ নামের অ্যাকাউন্টে জমা না হওয়ায় অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

একাধিক গ্রাহক জানান, সারাদেশে ইসলামী ব্যাংকের সুনাম থাকায় নিজ এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে এফডিআর করেছিলেন তারা। জমা টাকার বিপরীতে এজেন্ট তার একটি হিসাবের ব্যাংক চেক দিতেন গ্রাহকদের।

হেনা পারভীন  নামে এক গ্রাহক জানান, গত ১২ জুলাই ১২ লাখ টাকার একটি এফডিআর করেছি আমি। তখন তাকে জামান ট্রেডার্স নামে ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখার একটি হিসাবের ১২ লাখ টাকার চেক দেওয়া হয়। এখন জানতে পেরেছেন ওই টাকা জমা না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

উপজেলার মাধবপুর গ্রামের মুন্নু মাতুব্বরের মেয়ে রুখসানা বলেন, তিন লাখ টাকা ব্যাংকে এফডিআর করেছিলাম। আমাকে একটি চেকও দেয়। এখন দেখছি ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। অনেক কষ্ট করে এই টাকাটা জমা করেছিলাম। এখন আমার টাকার কী হবে জানি না। কুণ্ডুরামদিয়া গ্রামের আরেক গ্রাহক ইছহাক শেখের ছেলে চুন্নু শেখ বলেন, ‘এক লাখ ৭০ হাজার টাকা রেখেছিলাম। এখন শুনছি টাকা নেই।

ভাটদী বাজারে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যক্রম শাখাটির ক্যাশিয়ার বাদশা মিয়া বলেন, একাধিক গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর পালিয়েছেন মূল এজেন্ট আক্তারুজ্জামান হাসু। এজেন্ট আক্তারুজ্জামান হাসুর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করেছি। যখন বুঝতে পারি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। তখন মালিকের সঙ্গে কথা বলি। তিনি বলেন, আমি না থাকলেও আমার ভাই-বোন আছে। তারা টাকা পরিশোধ করে দেবে। আমাদের আউটলেটের প্রায় ৫০ জন গ্রাহকের এক কোটি ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তিনি পালিয়েছেন। তার ফোন নম্বরও গত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। অভিযুক্ত আক্তারুজ্জামান হাসুর মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে ইসলামী ব্যাংকের বোয়ালমারী শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মুহিত শেখ বলেন, ইসলামী ব্যাংকের নামে তিনি যদি গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ