শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্কুলে না গিয়ে ২ বছর ধরে বেতন নিচ্ছেন ছাতকের শিক্ষিকা

মীর মো. আমান মিয়া লুমান, ছাতক(সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার জামুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক সহকারী শিক্ষিকা অনুপমা দাশ লিজা প্রায় দু’বছর ধরে বিদ্যালয়ে না গিয়ে নিয়মিত বেতন ভাতা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহিদ মজনুসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা, সহকারী শিক্ষক কমিটির নেতা প্রনব দাশ মিটু ও আনোয়ার হোসেন সোহাগ এর সঙ্গে শিক্ষিকার আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। এ সুবাদে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে উপজেলার দুর্নীতিবাজ সাবেক শিক্ষা অফিসার মাসুম মিঞা ও বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিজ মিঞাকে ম্যানেজ করে চলছে এই অনিয়ম-দুর্নীতি।

গত ১৫ আগস্ট সহকারি শিক্ষিকা অনুপমা দাশ লিজার বিরুদ্ধে বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা, সিলেটসহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল আজিজ। এতে লেখাপড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যালয়ের শত শত কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সহকারী শিক্ষিকা অনুপমা দাশ লিজা প্রায় দু’বছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাসায় বসে প্রতিমাসে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন।

তিনি ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস ২য় মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করেছেন। তার বাচ্চার জন্ম হয়েছে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ। সেই অনুযায়ী তার বাচ্চার জন্মের প্রায় ৩ মাস পরে ছুটি নেওয়া হয়। তারপর তিনি ২০২১সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৫মার্চ পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ডিউটি করেন। পরে আবার ২০২২ সালের ৬ মার্চ থেকে থেকে ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটানা নিজ কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।

পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১জানুয়ারি থেকে গত ২৩ মে পর্যন্ত পুনরায় ডিউটি করলেও ২৬ মে থেকে অদ্যবধি তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

উপজেলার দুর্নীতিবাজ সাবেক শিক্ষা অফিসার মাসুম মিঞা ও বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিজ মিয়াকে ম্যানেজ করে চলছে এই অনিয়ম-দুর্নীতি।

আরও অভিযোগ উঠেছে, সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিক ও সাবেক পৌর মেয়র আব্দুল ওয়াহিদ মজনুসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা, সহকারি শিক্ষক কমিটির নেতা প্রনব দাশ মিটু ও আনোয়ার হোসেন সোহাগ এর সঙ্গে শিক্ষিকার আত্মীয়তার সম্পর্ক থাকার সুবাদ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তার মনগড়া ছুটি, ইচ্ছা মতো ডিউটি এসব কাজ করছেন সহকারি শিক্ষিকা অনুপমা দাশ লিজা।

গত ১৫ আগস্ট বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা, সিলেটসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহকারি শিক্ষিকা অনুপমা দাশ লিজার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল আজিজ।

এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষিকা অনুপম দাস লিজার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে সাংবাবিদক পরিচয় পেয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।

এব্যাপারে জামুরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান সহকারী শিক্ষিকা অনুপম দাস লিজার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি কর্তব্যরত থাকাকালীন লিজার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বার বার অভিযোগ করার পরও সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুম মিঞা কোনো প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল আজিজ সহকারী শিক্ষিকা অনুপম দাস লিজার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে বিদ্যালয়ে না এসে বেতন ভাতা নিয়মিত উত্তোলন করছেন এই শিক্ষিকা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তফা মুন্না অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে প্রাথমিত তদন্তের অভিযোগের সত্যতা মিলছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ