রিফাত হোসেন মেশকাত, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে কর্মরত উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) ইন্সট্রাক্টর জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা, সামাজিক স্বীকৃতি ও প্রদেয় টাকা ফেরৎ পেতে প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফাতেমাতুজ জুহুরা নামের শিক্ষিকা।
তিনি নওগাঁ জেলার ধামইরহাটের ফার্শিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।
শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ধামইরহাট এলাকায় কর্মরত আরো কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষিকাকে সাথে নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফাতেমাতুজ জুহুরা নামের ওই শিক্ষিকা। এসময় তিনি জাহাঙ্গীর আলমকে লম্পট, ধর্ষক, গর্ভপাতকারী ও অর্থ আত্মসাৎকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওই শিক্ষিকা জানান, ধামইরহাটে চাকরিসূত্রে জাহাঙ্গীর আলম ও শিক্ষিকা ফাতেমাতুজ জহুরার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর আলম ওই শিক্ষিকাকে চাকরির ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন, যা তিনি প্রত্যাখান করতেন। পরে এক পর্যায়ে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন তারা। গত বছরের ২০ মার্চ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন জাহাঙ্গীর আলম। এই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি আরেকটি সংসারের কথা গোপন করে ওই শিক্ষিকাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গোপনে বিয়ে করেন জাহাঙ্গীর আলম। প্রায় ৭ মাস যাবৎ গোপনে করা সংসারে সন্তান ধারণ করেন ওই শিক্ষিকা। পরে নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়ার কথা জানালে নানা তালবাহানা শুরু করেন ও সুকৌশলে গত ২৩ মে জোরপূর্বক তাকে গর্ভপাত করায় স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। রাজশাহীতে তাকে ফ্ল্যাট লিখে দেওয়ার নামে বিভিন্ন সময় হাতিয়ে নিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা। গত ৮ আগস্ট থেকে তাকে অস্বীকার করে সকল যোগযোগ বন্ধ করে দেয় স্বামী জাহাঙ্গীর আলম।
ন্যায়বিচারের দাবিতে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ করলে জানতে পারেন স্বামী জাহাঙ্গীর আলম তাকে তালাক দিয়েছেন। এখন তিনি স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা, সামাজিক স্বীকৃতি ও প্রদেয় টাকা ফেরৎ পেতে আদালত ও বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
শিক্ষিকা ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন, লম্পট, ধর্ষক, গর্ভপাতকারী ও অর্থ আত্মসাৎকারী বর্তমানে আক্কেলপুরে কর্মরত ইউআরসি ইন্সট্রাক্ট জাহাঙ্গীর আলমের কারণে আমি এখন কর্মস্থল ও সমাজে হেয় প্রতিপন্ন। আমার যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। প্রতারণার মাধ্যমে আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার সংসার নষ্ট করে সে আমাকে বিয়ে করেছে, সন্তান গর্ভপাত করিয়েছে ও টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমি আদালতেরও দারস্থ হয়েছি। আমাকে তার স্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে এবং আমার টাকা ফেরৎ দিতে হবে। আমি সকলের কাছে ন্যায় বিচার চাই।
রোববার দুপুরে এ সকল বিষয়ে ইন্সট্রাক্টর জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বলার জন্য আক্কেলপুর উপজেলা রিসোর্স সেন্টার তার কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি ও তার মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।