আবিদ হাসান, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) : প্রতিবছর পানি বাড়ার সাথে সাথে বাধে নামে ধস। এছাড়াও প্রতিবছর অব্যাহত বৃষ্টি আর উজান থেকে বয়ে আসা বন্যার পানিতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্টে উপজেলা রক্ষা বাঁধ ধসে যায়। ফলে যেকোনো সময় বড় ধরনের বিপর্যয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন।
বর্তমানে প্রবল স্রোত আর ঢেউয়ের কারণে উপজেলার পদ্মানদী তীরবর্তী আন্ধারমানিক, খালপাড়, দাসকান্দি, ভাওয়ারডাঙি, দড়িকান্দি, হারুকান্দি, বকচর, জগনাথপুর, আলগীচর, রামকৃষ্ণপুর, বাহাদুরপুর, গোপিনাপুর, কাঞ্চপুর, ধুলশুরাসহ পুরো উপজেলার বিভিন্ন নদী তীরবর্তী এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানেই ভাঙন শুরু হয়। ফলে জিও ব্যাগ দ্বারা নদী শাসনের কাজ চলমান থাকলেও প্রতিবছর কিছু না কিছু এলাকার অংশ পদ্মার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আবার চরাঞ্চলে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ দ্বারা ভাঙন রোধের চেষ্টা করলেও তা বিফলে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে গত দুই বছরে কোর্টকান্দি, মহম্মদপুর, বৌদ্ধকান্দিতে শত শত বিঘা জমি ও বাড়িঘড় পদ্মার তাণ্ডবে হারিয়ে গেছে। এছাড়াও গত কয়েকবছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টিই নদীগর্ভে চলে গেছে বলে জানা যায়। ফলে পদ্মানদীর অতি নিকটে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদসহ হুমকিতে রয়েছে সরকারি, বেসরকারি সম্পদ।
উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামের জাহেদ জানান, প্রতিবছর বর্ষা এলে একই জায়গায় বাধে ধস নামে। প্রতিবছর অস্থায়ী বাঁধে যে টাকা খরচ হয়, কয়েক বছরের টাকা একসাথে করলে তাতে করে নতুন স্থায়ী বাঁধ দেয়া যায় বলে ধারণা করছি। তাছারা, স্থায়ী বাঁধ হলেতো প্রতিবছর মোটা অংকের টাকা পকেটে যাবে না বলে হয় না। নাকি করে না, এটা বুঝি না।
বকচর গ্রামের মাসুদুর রহমান জানান, আমাদের গ্রামসহ নদী তীরবর্তী পুরো এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবছর জিও ব্যাগ ধস নামে। আবার সেখানে কিছুটা বস্তা ফেলে, এটা অস্থায়ী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার জোর দাবি- স্থায়ী একটা বাধ দিয়ে হরিরামপুরের অসহায় মানুষদের পাশে যেন তিনি দারান, এজন্য মাননীয় এমপি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন সুদৃষ্টি কামনা করেন।
খালপাড় এলাকার জয়নাল জানান, প্রতিবছর বন্যার সময় এই জায়গাটি ভাঙে। এখানে দু একদিনের বস্তা না ফেললে আমাদের পঁচিশটি পরিবারের বাড়িঘড় পদ্মায় নিয়ে যাবে। আমরা সরকার এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। একটা স্থায়ী বাঁধ না করলে দু’দিন আগে পরে ভাঙনে আমাদের রাস্তায় ঠাঁই হবে কি না জানি না।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈদ উদ্দিন বলেন, জরুরিভাবে ভাঙন কবলিত স্থানে আমরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। হরিরামপুর উপজেলায় প্রায় ১৪ কি.মি. বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি বর্তমানে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন আছে।
মানিকগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু বলেন, হরিরামপুর পদ্মা ভাঙন কবলিত এলাকা। পরবর্তী সংসদে আমি বিষয়টি উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি গোচরে আনবো। আশাকরি, স্থায়ী একটা ব্যবস্থা হবে।