
মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি: ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট—বাংলাদেশের রাজপথে যখন ফের ইতিহাস লিখছিল ছাত্র-জনতা, ঠিক তখনই টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) জন্ম নেয় এক যুগান্তকারী মুহূর্ত।
৩ আগস্ট ২০২৪, এক জুম জুম বৃষ্টির দিন। বাতাসে বারুদের গন্ধ, আকাশভর্তি বিদ্রোহের শব্দ। সেই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে এগিয়ে যায় শতাধিক শিক্ষার্থী—চোখে স্বপ্ন, কণ্ঠে প্রতিবাদ, আর হৃদয়ে আগুন জ্বালানো ক্ষোভ। তাদের একটাই লক্ষ্য: স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনের পতন, গণহত্যার বিচার এবং একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠা।
তবে ইতিহাস গড়ে ওঠে তখনই, যখন সাহস একা থাকে না।আর সেই সাহসকে একাকী হতে দেননি কিছু শিক্ষক।
নির্বিক, নীতিবান, মানবিক অবস্থানে দাঁড়িয়ে তাঁরা বলেছিলেন—আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর আর গুলি চালাবেন না, গুলি চালাতে হলে আমাদের ওপর চালান।
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ ফজলুল করিম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিছক ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ছিল না, এটি ছিল সময়কে পাল্টে দেওয়ার এক বিস্ফোরণ। আমাদের ছাত্র আবু সাঈদের নির্মম হত্যাকাণ্ড আন্দোলনকে নতুন গতিপথ দেয়। মাভাবিপ্রবির শিক্ষক সমাজের সচেতন অংশ প্রতিবাদে যুক্ত হয়—আমরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে দাঁড়াই, সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখির মাধ্যমে প্রতিবাদ চালিয়ে যাই। আগস্ট ২ তারিখ সকালে কিছু সহকর্মী মিলে সিদ্ধান্ত নিই, সরকার কর্তৃক সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি যৌথ বিবৃতি দেব। শিক্ষক গ্রুপে প্রস্তাব উত্থাপন করলে একে একে অনেকেই পাশে এসে দাঁড়ান। সন্ধ্যার মধ্যেই প্রায় ৭০ জন শিক্ষকের স্বাক্ষরে বিবৃতি সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়। সেই পথচলা সহজ ছিল না। কটূক্তি, হুমকি, প্রশাসনিক চাপ উপেক্ষা করেই আমরা অটল ছিলাম।
২ আগস্ট দিবাগত রাতে আমার কাছে একের পর এক থ্রেট কল আসতে থাকে। সারা রাত পরিবার আর ছোট সন্তানের কথা ভেবে অস্থির ছিলাম। প্রতিবাদে শামিল ছাত্রদের কাছ থেকেও ফোন আসে। তারা মাভাবিপ্রবির প্রধান ফটকে অবস্থান নিতে চায়। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, কী করব। তবে কিছু প্রিয় সহকর্মী পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জুগিয়েছিলেন।
পরিবারের বাধা উপেক্ষা করে ৩ আগস্ট সকালে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে উপস্থিত হই মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ছাত্রদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আমরা একটাই বার্তা দিতে চেয়েছি—আমাদের ছাত্রদের উপর যেন গুলি না চালানো হয়। সেদিন মনে হয়েছিল, প্রয়োজনে জীবন দিতেও প্রস্তুত, কিন্তু ছাত্রদের যেন রক্ষা করতে পারি। আমার বক্তব্যের পরপরই ছাত্ররা ফটক অতিক্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। সেটিই ছিল আমাদের পক্ষ থেকে প্রথম বিজয়।
আমরা যা করেছিলাম, করেছি সময়ের প্রয়োজনেই। আবারও করব, যদি ছাত্রদের অধিকার বা দেশের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়ে। তবে সত্যিকারের টেকসই বিজয় তখনই আসবে, যখন বাংলাদেশের ছাত্ররা দেশপ্রেম নিয়ে গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পক্ষে অবিচল থাকবে। যদি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন বাংলাদেশকে সত্য, ন্যায় ও গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে পারে, তবে আমাদের প্রচেষ্টা হয়ে থাকবে ইতিহাসের এক দায়িত্বশীল অধ্যায়।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা কামাল নাসির বলেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের সেই দিনগুলো আজও আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে। বাংলার আকাশ জুড়ে যেন অন্য এক রঙ ছড়িয়ে পড়েছিল—বিক্ষোভের, প্রতিবাদের, আর আশার রঙ। আমি মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে, আমার মনের ভেতর দ্বন্দ্ব চলছিল। ছিল প্রশাসনের চাপ, সমাজের নানা দৃষ্টিভঙ্গি, পরিবার নিয়ে চিন্তা—সব মিলিয়ে একটা অস্থিরতা কাজ করছিল।
কিন্তু যখন দেখলাম আমার ছাত্ররা শুধু নিজের জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য রাস্তায় নেমেছে, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি তাদের পাশেই দাঁড়াব। রাজপথ তখন উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের দাবিতে—সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং একটি নিরাপদ বাংলাদেশের আশায় তারা বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আমি, একজন সাধারণ শিক্ষক, আমার ছাত্রছাত্রীদের কণ্ঠে যখন বিপ্লবের ঝংকার শুনলাম, তখন আর চুপ করে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। স্বৈরাচারী দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে যখন আমাদের ছাত্ররা টাঙ্গাইলের রাজপথ কাঁপিয়ে দিচ্ছিল, তখন আমি একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়াতে একটুও দ্বিধা করিনি।
২ আগস্ট মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ জন শিক্ষক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় যে বিবৃতিটি পাঠানো হয়, সেটি পাঠিয়েছিলাম আমি।
৩ আগস্ট দুপুর ১২:০০টায় আমি কিছু সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে একত্রিত হয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে। আমার উপস্থিতি দেখে অনেকেই আমাকে সাবধান করেছিল, কিন্তু আমি জানতাম একজন শিক্ষকের দায়িত্ব শুধু পাঠ্যপুস্তক শেখানো নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধে, ন্যায়ের পথে সাহস জোগানো।
আমরা একসঙ্গে স্লোগান দিয়েছিলাম, আমরা একসঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে তুমুল বৃষ্টির মধ্যেও মানববন্ধন করেছিলাম।সেদিন এক ছাত্র আমার হাত ধরে বলেছিল, “স্যার, আপনি পাশে আছেন বলেই আমরা ভয় পাচ্ছি না।”সেই মুহূর্তে আমি বুঝেছিলাম, শিক্ষকতা কেবল পেশা নয়, এটা একটা দায়িত্ব, এটা একটা সম্পর্ক—যেখানে সাহস আর মূল্যবোধের সংযোগ ঘটে।
আমরা দাঁড়িয়ে শুধু সরকারের অবিচারের প্রতিবাদ করিনি, আমরা দাঁড়িয়েছিলাম আমাদের ভবিষ্যতের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে, এবং সেই বাংলাদেশ গড়ার পক্ষে—যা ভাসানীর আদর্শে গড়া, সত্য, ন্যায় ও স্বাধীনতার বাংলাদেশ।
আজও যখন ক্যাম্পাসে হাঁটি, সেই আন্দোলনের পদচিহ্ন যেন বাতাসে ভেসে বেড়ায়। আমি গর্বিত, কারণ আমি শুধু একজন শিক্ষকই ছিলাম না, আমি ছিলাম একজন সহযোদ্ধা, একজন সাক্ষী একটি বিপ্লবের—যা তরুণদের হাত ধরে সত্য ও ন্যায়ের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল।
আজ এক বছর পর, যখন ফিরে তাকাই, গর্বে আমার বুক ভরে যায়। অনেক কিছু হয়তো আমরা এখনো পাইনি, কিন্তু সেই আন্দোলন আমাদের আত্মমর্যাদা ফিরিয়ে দিয়েছিল। আমি এখনো বিশ্বাস করি—যখন শিক্ষক ও ছাত্র একসাথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন ইতিহাস বদলাতে বাধ্য হয়।
বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, “আমরা মাভাবিপ্রবির ৬৭ জন শিক্ষক ২ আগস্ট ২০২৪ সালে ‘জুলাই-আগস্টের আন্দোলন’ চলাকালে সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকের ওপর নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস ও স্বৈরাচারী আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছিলাম। ওই বিবৃতিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলাম, যেন অবিলম্বে ছাত্র সমন্বয়কারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং ছাত্র-শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবিসমূহ মেনে নেওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গেও আলোচনা করেছি, যাতে তিনি নিশ্চিত করেন, কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করা না হয়। সেই সঙ্গে কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি বা হুমকি দেওয়া না হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছিল স্বৈরাচারী পন্থায়, এবং তৎকালীন সরকারের দলীয় ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা ছাত্র-শিক্ষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দিয়েছিল।”
”ভিসি ও তাঁর মদদপুষ্ট প্রশাসন আমাদের দেওয়া বিবৃতি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে পাঠানোর হুমকিও দিয়েছিল,” — বলেন তিনি।
ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোছা. নুরজাহান খাতুন বলেন,
ঐতিহাসিকভাবে দেশ-কাল ভেদে প্রতিটি জাতির জীবনে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সে জাতির মানসসম্পদকে ধারণ ও বহনকারী প্রতিষ্ঠান—বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৫ আগস্ট ২০২৪, বাংলাদেশের ইতিহাসে যে অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে, সেখানেও পূর্বাপর পরিক্রমায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুঃসাহসিক ভূমিকা প্রতিটি স্তরের সচেতন ও প্রকৃত দৃষ্টিসম্পন্ন নাগরিককে আন্দোলনে অংশগ্রহণে ও সমর্থনদানে উৎসাহ যুগিয়েছে এবং আন্দোলনকে সফল করেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানে মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের অকুতোভয় সংগ্রামী ভূমিকা শিক্ষক হিসেবে আমাদের গর্বিত করেছে। যদিও শুরু থেকেই তৎকালীন প্রশাসনের নানামুখী নেতিবাচক চাপে আমরা অনেক শিক্ষকই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমাদের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারিনি; যার জন্য আজও গ্লানিবোধ করি। তবে হ্যাঁ, সমমনা কিছু সহকর্মীর সাথে রাষ্ট্রযন্ত্রের এহেন নিপীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্র পরিসরেও নানাবিধ প্রতিবাদমূলক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পেরেছিলাম, যা কিছুটা হলেও আমার শিক্ষকসত্তাকে প্রশান্তি দেয়। জানি না, এটা আমার শিক্ষার্থীদের জন্য কতটুকু উৎসাহব্যঞ্জক ছিল।
সর্বোপরি, যে ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের অঙ্গীকারে এত প্রাণ ও রক্ত ঝরলো—আমরা যেন নিজ কর্মে সেখান থেকে কোনোভাবেই বিচ্যুত না হই, আজকের উদযাপনে শিক্ষক হিসেবে এটাই আমার প্রত্যাশা।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল বাশার বলেন, ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট এর সময় ছিল এক গুমোট, ভয় এবং আতঙ্কের সময়। সারা দেশের ছাত্রজনতা যখন স্বৈরাচার সরকারে বিরুদ্ধে লড়ছে আমাদের প্রিয় মাওলানা ভাসানি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তখন সুনশান নীরব। কেননা তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রছাত্রীদেরকে জোরপূর্বক ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করে। কিন্তু সচেতন অগ্রগামী আমাদের অনেক ছাত্র ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন ম্যাচে অবস্থান করে টাঙ্গাইল শহর এর বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে নিজ নিজ এলাকায় এ সংগ্রামের সাথে যুক্ত থেকেছে। এভাবে প্রশাসনের বাধা ও জুলম নিপীড়ন উপেক্ষা করে আমাদের ছাত্র সমাজ দেশ গঠনের এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। আমরা সাধারণ শিক্ষক সমাজ সারা দেশে ছাত্রদের উপর নির্বিচার গুলি বর্ষণ, হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতন দেখে আতঙ্কিত এবং উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি।
তিনি আরও বলেন, আমার শুধু বিবেকের পীড়ন বাড়ছিল এই ভেবে যে, একটি দেশে সাধারণ ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচার হত্যা এবং নির্যাতন হচ্ছে অথচ আমরা আমাদের ছাত্রদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। এর মধ্যেও প্রশাসনের বাধা এবং ভয় ভীতি উপেক্ষা করে কাল ব্যাচ ধারণ, মানববন্ধনের মত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করি। এছাড়া আমার কিছু সহকর্মীর উদ্যোগের প্রেক্ষিতে আমরা ৭০ জনের মত শিক্ষক ছাত্রদের পক্ষে বিবৃতি প্রদান করি। এসব উদ্যোগের জন্য বিজিই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম ভাইয়ের অবদান প্রণিধান যোগ্য।
ছাত্রদের আহ্বানে ৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে মানববন্ধনের করার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত নিদারুণ পরিতাপের বিষয় ছিল যে, তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ছাত্রদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ক্যাম্পাসের সকল গেটে তালা ঝুলেয়ে দেয়। যা ছাত্রদের জন্য ভীষণ যন্ত্রণার কারণ হয় এবং তাদেরকে আরও ক্ষুব্ধ করে তুলে। মানববন্ধনে ছাত্ররা আমাদেরকে পেয়ে দারুণভাবে সাহসী ও প্রত্যয়ী হয়ে উঠে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের তালা ভেঙ্গে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারই ধারাবাহিকতায় সারা দেশের ছাত্র জনতার সংগ্রাম ও প্রতিরুধের মুখে তৎকালীন সরকারের পতন ঘটে। এভাবে হাজারো ছাত্র জনতার সংগ্রাম, ত্যাগ তিতিক্ষা এবং রক্তের বিনিময়ে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি স্বৈরাচার মুক্ত হয়। এখন দেশ পরিবর্তিত নুতন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে জাচ্ছে, যেখানে আমাদের সকলকে বিশেষভাবে ছাত্রসমাজকে সতর্ক থাকতে হবে যেন দেশে আবার কেও যেন স্বৈরাচার হয়ে না উঠতে পারে।