শুক্রবার, ১৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

৫ মাসে তৈরি স্টেডিয়াম দেখে ‘অবাক’ শান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক : কয়েক মাস আগেও এটি ছিল খোলা এক প্রান্তর। স্রেফ পার্কের একটি মাঠ। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোও দেখেছিলেন নাজমুল হাসেন শান্ত। সেখানে এসেই এখন চমকে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এবড়োখেবড়ো সেই খোলা মাঠই যে এখন রূপ নিয়েছে দারুণ এক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। কাছ থেকে দেখেও যেন বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না তিনি।

প্রায় ৫ মাসে তৈরি হওয়া নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ঐতিহাসিক যাত্রা শুরুর সঙ্গী হচ্ছেন শান্তরা। শনিবার এখানেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রস্তুতি ম্যাচ।

বলা হচ্ছিল, আইসিসির সবচেয়ে উচ্চভিলাসি প্রকল্পগুলোর একটি এটি। সেখানে তারা দারুণভাবেই সফল। পার্কের এক সাধারণ মাঠকে ৫ মাসের মধ্যে ৩৪ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার বিশ্বকাপ ভেন্যুতে রূপ দেওয়া হয়ে গেছে। গত ১৫ মে স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন বিশ্বের দ্রুততম মানব ও এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত উসাইন বোল্ট। এরপর এখানে কিছু কমিউনিটি ক্রিকেট ম্যাচ ও ইভেন্ট আয়োজন করেছে আইসিসি। তবে মাঠের সত্যিকারের পথচলা শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে।

বিশেষ এই উপলক্ষের আগে দুই দলের অধিনায়ক শান্ত ও রোহিত শার্মা ঘুরে দেখেছেন এই মাঠ, উইকেটসহ সবকিছু। সেসবের সঙ্গে তাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছে আইসিসি।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাঠে গিয়ে উইকেট পরখ করে দেখছেন শান্ত। অবাক চোখে তিনি তাকিয়ে দেখছেন গ্যালারি ও চারপাশ। বাংলাদেশ অধিনায়কের সেই বিস্ময়টা ফুটে উঠল কণ্ঠেও। তিনি বলেন, এটা অবিশ্বাস্য! আমার মনে হয়, পুরোই পাগলাটে ব্যাপার। গোটা স্টেডিয়াম দেখে, উইকেট, আবহ, সবকিছুই খুব ভালো। আমার কাছে একদমই পাগলাটে মনে হচ্ছে। আমরা সবাই জানি, এখানে অনেক বেসবল, বাস্কেটবল খেলা হয়। কিন্তু আমরা আশা করিনি, ক্রিকেট এখানে এরকম হবে। এটা পুরোপুরি সত্যিকারের ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মতোই মনে হচ্ছে। ইন্টারনেটে আমরা দেখেছিলাম, এখানে কিছুই ছিল না (কয়েক মাস আগে)। এখন এটাকে উপযুক্ত ক্রিকেট স্টেডিয়ামই মনে হচ্ছে। দারুণ লাগছে।

শুধু প্রস্তুতি ম্যাচই নয়, মূল বিশ্বকাপেও এখানে একটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আগামী ১০ জুন সেই ম্যাচে শান্তদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রে যে ১৬টি ম্যাচ হবে, এর মধ্যে ৮টিই হবে এই নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। গ্রুপ পর্বে ভারতের ৩টি ম্যাচ আছে এই মাঠে।

ম্যানহাটল থেকে ২৫ মাইল পূর্বে আইজেনহাউয়ার পার্কে গড়ে তোলা এই স্টেডিয়ামকে বলা হচ্ছে ক্রিকেটবিশ্বের প্রথম ‘মডুলার’ স্টেডিয়াম। গত জানুয়ারিতে এখানে স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করে আইসিসি। গ্যালারির বেশ কিছু অংশসহ মাঠের অনেক স্থাপনাই অস্থায়ী, তবে তা পোক্ত ও মজবুত।

বিশ্বকাপের ভেন্যু হয়ে ওঠার পথে এখানে বড় এক চ্যালেঞ্জ ছিল উইকেট তৈরি করা। এত কম সময়ে উপযুক্ত উইকেট তৈরি করা যাবে না জেনেই ড্রপ-ইন উইকেট তৈরির পথ বেছে নেয় আইসিসি। ফ্লোরিডায় ১০টি ড্রপ-ইন পিচ তৈরি করা হয়।

সেই পিচগুলো তৈরি করার দায়িত্ব পায় ‘অ্যাডিলেইড ওভাল টার্ফ সলিউশন্স।’ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেইড ওভালের প্রধান কিউরেটর ড্যামিয়ান হাউ এই প্রতিষ্ঠানেরও প্রধান। তার তত্ত্বাধানেই তৈরি হয় পিচগুলি। পরে ২০টির বেশি সেমি-ট্রেইলার ট্রাকে ১ হাজার ১০০ মাইল পাড়ি দিয়ে পিচগুলি আনা হয় নিউ ইয়র্কে।

অ্যাডিলেইড ওভাল ও নিউ জিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ইডেন পার্কে এই ধরনের ড্রপ-ইন উইকেটই ব্যবহার করা হয়। এই মাসের শুরুতে অত্যাধুনিক ক্রেন দিয়ে মূল মাঠে চারটি পিচ স্থাপন করা হয়। মূল মাঠের কাছেই অনুশীলন মাঠে স্থাপন করা হয় বাকি ছয়টি পিচ। বিশ্বকাপজুড়ে পিচগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বেও থাকবে এই ‘অ্যাডিলেইড ওভাল টার্ফ সলিউশন্স।’

মাঠের আউটফিল্ড তৈরি করে ল্যান্ডটেক গ্রুপ। যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্ক ইয়াঙ্কিস ও নিউ ইয়র্ক মেটসের মাঠসহ বেশি কিছু বেসবল মাঠ তৈরির অভিজ্ঞতা যাদের আছে। ফুটবল ক্লাব ইন্টার মায়ামির মাঠও তাদের হাতেই তৈরি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *