বুধবার, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পদ্মার চরাঞ্চলে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: ১১ সন্ত্রাসী গ্রুপের ৬৭ জন গ্রেপ্তার

পাভেল ইসলাম মিমুল, উত্তরবঙ্গ: রাজশাহী, নাটোর, পাবনা ও কুষ্টিয়ার পদ্মার চরাঞ্চলে দাপিয়ে বেড়ানো সন্ত্রাসীদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’।

রোববার ভোররাত থেকে সারাদিন রাজশাহীর বাঘা, নাটোরের লালপুর, পাবনার আমিনপুর ও ঈশ্বরদী এবং কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চরে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ১১টি সন্ত্রাসী বাহিনীর ৬৭ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার বিকেলে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান এতথ্য জানান। তাঁর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও জানান, ৬৭ জনের মধ্যে ৫৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে রাজশাহী রেঞ্জের রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর জেলার চরাঞ্চলে। অন্য নয়জন গ্রেপ্তার হয়েছে খুলনা রেঞ্জের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলে। এরা কাকন বাহিনীসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য।

এ অভিযানকালে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি গুলি, দুটি গুলির খোসা, ২৪টি হাসুয়া, ছয়টি ডেগার, দুটি ছোরা, চারটি চাকু, তিনটি রামদা, দুটি চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চর থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা, একটি স্পিড বোড, দুটি তাবু ও পাঁচটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

ডিআইজি বলেন, ওই চরে মোট ১১টি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। রোববার ভোরে তাদের দমনে পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন সদস্যদের নিয়ে যৌথ অভিযান শুরু হয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ফার্স্ট লাইট’। এতে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ টিমের ১ হাজার ২০০ সদস্য অংশ নেন। এছাড়া র‌্যাব ও এপিবিএনের সদস্যরাও অভিযানে অংশ নেন।

ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, পদ্মার চরের কাকন বাহিনী ছাড়াও সন্ত্রাসী বাহিনীগুলোর মধ্যে রয়েছে মন্ডল বাহিনী, টুকু বাহিনী, সাঈদ বাহিনী, লালচাঁদ বাহিনী, রাখি বাহিনী, শরীফ কাইগি বাহিনী, রাজ্জাক বাহিনী, চল্লিশ বাহিনী, বাহান্ন বাহিনী, সুখচাঁদ ও নাহারুল বাহিনী। এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পারস্পরিক দ্বন্দ্বের ফলে খুন, চরের চাষী ও জেলেদের হত্যা, চরের জমি দখল, বাথানের রাখাল ও মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, মাদক ও অস্ত্র পাঁচার, বেআইনী অস্ত্র দখলে রাখা, নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ও সর্বহারাদের আশ্রয়-পশ্রয় দান, পদ্মা চরের খড়ের মাঠ দখল এবং ডাকাতি। এতে অশান্ত থাকে চরাঞ্চল।

ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এই অভিযানই শেষ নয়। অভিযান শুরু হলো। এটি থেমে যাবে না। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান চলবে। সন্ত্রাসী বাহিনীর কার্যক্রম পুরোপুরি নির্মুল সম্ভব না হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।’

গত ২৭ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর, রাজশাহীর বাঘা ও নাটোরের লালপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী খানপাড়া চার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন। পরবর্তীতে কাকন বাহিনীর প্রধান হাসিনুজ্জামান কাকনসহ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ