সোমবার, ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পশ্চিম রেল মেডিকেলে চাকুরী বিধি লংঘন, অনিয়ম দুর্নীতি আর স্বজন প্রীতি যেখানে নিয়ম

আবুল হাশেম, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ে মেডিকেলে চাকুরী বিধি লংঘন করে ১৯তম গ্রেডের ৪র্থ শ্রেণীর চার কর্মচারীকে ১১তম গ্রেডের ২য় শ্রেণীর অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এতে ২য় শ্রেনীর কর্মকর্তাদের মাঝে বৈষম্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও লোকবলের সংকট দেখিয়ে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের লক্ষে এই কাজটি করেছেন পশ্চিম রেলওয়ে মেডিকেল প্রধান (সিএমও) সুজিত কুমার রায়।
১১তম গ্রেডের ২য় শ্রেণীর স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে দীর্ঘদিন যাবৎ অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছেন ৪র্থ শ্রেণীর চারজন কর্মচারী। তারা হলেন, শান্তাহারে কর্মরত ৪র্থ শ্রেণীর ড্রেসার পদের আঃ মান্নান, পাকশীতে কর্মরত জমাদার পদের জগবন্ধু বিশ্বাস, খুলনায় কর্মরত জমাদার পদের অয়ন সরকার, ঈশ্বরদীতে কর্মরত জামাদার পদের আকরাম। উক্ত চার ব্যক্তি এখন অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে ২য় শ্রেণীর সিঃ স্যানিটারী ইন্সপেক্টর। উক্ত চার ব্যক্তিসহ উর্ধতন অফিসারদের যোগসাজশে নিয়ম বহির্ভূতভাবে চাহিদা প্রদান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরবরাহ না নিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী এ পদের অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে এসে চাহিদা পত্রে স্বাক্ষর করার এখতিয়ার রাখে না। যেখানে রেলের অডিটে আপত্তি তুলতে পারেন। সে আপত্তি বা নিয়মকে ম্যানেজ করে চলছে লোপাটের মহোৎসব। কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দূর্নীতি করার লক্ষে তাদের উক্ত পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, একজন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর থাকা শর্তেও ১৯ তম গ্রেডের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে সিনিয়র স্যানিটারী পদে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দেওয়া কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। তাহলে কি অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পাওয়া ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর স্যার সম্বোধন করবেন?

বিশ্বাস্ত একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে ২০১৯ সাল থেকে অতিরিক্ত দ্বায়িত্বে স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে জগবন্ধু বিশ্বাস রাজশাহীতে কর্মরত আছেন। ইতোমধ্যে কোটি টাকার উপরে চাহিদা পত্র দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

একইভাবে আ. মান্নান, আকরাম ও অয়ন সরকারী কোষাগারের টাকা লোপাট করছেন।

জানা গেছে ২০২১ সালের ২রা নভেম্বরে ৫০০ পিচ ল্যাটিন বাকেটের চাহিদা পত্রের বিপরীতে মালামাল না নিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন। এরুপ অনেক চাহিদাপত্র এখন প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত। যাতে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

কথা বললে ডিএমও রাজশাহী বলেন, আমি ওভার টেলিফোনে কথা বলবো না। কালকে অফিসে আসেন কথা বলবো।

ডিএমও পাকশী শাকিল আহমেদকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে (সিএমও) চীফ মেডিক্যাল অফিসার সুজিত কুমার রায় এ বিষয়ে বলেন, আপনি সোমবার অফিসে আসেন অথবা ডিএমও পাকশী’র সঙ্গে কথা বলতে পারেন। ঠিকাদারের মালামাল আমরা বুঝে নেই না। এটা তারা (স্যানিটারী ইন্সপেক্টর) বুঝে নেয়। লোকবল সংকটে তাদের অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দেওয়া আছে।

এ বিষয়ে কথা বললে জিএম (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, এ বিষয়গুলো আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *