নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতে পা রাখবে ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় যুবসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সংগঠনটি। সারাদেশে মাসব্যাপী বর্ণিল কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যুবলীগ। মহাযুবসমাবেশের মাধ্যমে সরকার বিরোধীদের নিজেদের শক্তির জানান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামশ পরশ।
ওই দিন রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই যুব মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই মহাসমাবেশে সারা দেশ থেকে অন্তত আট থেকে ১০ লাখ নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশ এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বর্ণিল সাজে সাজানোর প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
তথ্য মতে, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অধিক সংখ্যায় অংশ নিচ্ছে। বিএনপির নেতারাও সমাবেশগুলোতে নেতাকর্মীদের শোডাউন করে নিজেদের শক্তি জানান দেয়ার কৌশল হিসেবে নিয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনার গণসমাবেশে বিএনপির নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল চোখেপড়ার মতো।
আগামী ২৯ অক্টোবর দলটির রংপুর শহরে রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে। এছাড়া আরো ছয় বিভাগে গণসমাবেশ করে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে রাজপথ নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া বিএনপি। কিন্তু তার আগেই নিজেদের শক্তির জানান দিয়ে বরাবরের মতো এবারো রাজপথ এবং দেশের রাজনীতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এর অংশ হিসেবে আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে। আগামী শনিবার রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন।
ওই সম্মেলনেও লাখো নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করছেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিজেদের মতো করে কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে শোডাউন করার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।
এরই অংশ হিসেবেই সুবর্ণজয়ন্তীর মাহেন্দ্রক্ষণে যুবলীগ স্মরণকালে সবচেয়ে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সারা দেশের পাশাপাশি ঢাকায় বর্ণাঢ্য আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ১১ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসবেশের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন পর ঢাকায় নিজেদের শক্তির জানান দেবে যুবলীগ। ওই দিন দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা থেকে শুরু করে গ্রাম থেকে পর্যন্ত নেতাকর্মীরা যুব মহাসমাবেশে দলে দলে যোগ দেবেন।
এ ব্যাপারে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, ‘রাজপথ কাদের, তা আগামী ১১ নভেম্বর দেখিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, লাশ ফেলে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় যেতে চায়। ওদের নৈরাজ্যের জবাব যুবলীগ একলাই দিতে পারে, তা প্রমাণ করব ইনশাআল্লাহ।’ মহাসমাবেশ সফল করতে গত শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও সব শাখার সমন্বয়ে বিশেষ বর্ধিতসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করছে। প্রস্তুতি সভা হচ্ছে দেশের সব জেলা-উপজেলায়। সমাবশে সফল করার জন্য যুবলীগের পক্ষ থেকে ১০টি উপকমিটি করা হয়েছে। উপকমিটির সদস্যরা নিয়মিত ভাবে সভা করে মহাসমাবেশে সফল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
জানতে চাইলে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘আমরা কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। ১১ নভেম্বর আবারো প্রমাণিত হবে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সাথে রয়েছে। বিশেষ করে দেশের যুবসমাজ যে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল তা আমাদের যুব মহাসমাবেশে প্রমাণিত হবে। যুবলীগ মিডিয়া ট্রায়ালে নয়, সত্যিকার অর্থে যুব মহাসমাবেশে লাখ লাখ যুবকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করবে রাজপথ বিএনপির নয়, যুবলীগ তথা আওয়ামী লীগের।’ স্বাধীনতা লাভের পর দেশে ফিরেই বাঙালি জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার মিশনে নেমে পড়েন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার কারণে বিশাল যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব দেন তৎকালীন বাংলাদেশের যুব রাজনীতির আলোকবর্তিকা শেখ ফজলুল হক মনিকে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যাত্রা শুরু হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের।