রবিবার, ১০ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৬শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

ভোলায় ফের জমে উঠেছে ইলিশের বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ২২ দিন বন্ধ থাকার পর জেলায় পুনরায় জমে উঠেছে ইলিশের ঘাট, মোকাম ও বাজারগুলো। 
এ বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ শিকার, আহরণ, মজুত ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারী করে সরকার। শনিবার রাত ১২ টার পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে ফের ব্যস্ত হয়ে উঠেছে জেলে পল্লীগুলো। রাতেই নদী-সাগরের উদ্দেশ্যে ছুটেছেন জেলেরা। আজ সকাল থেকে সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন মাছের ঘাট, আড়ৎ, পাইকারী এবং খুচরা বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক ও দর কষাকষিতে মুখরিত হচ্ছে ইলিশের বাজার। 

এছাড়া দীর্ঘ ২২ দিন নদী জাল শুণ্য থাকায় ইলিশসহ অনান্য মাছের ঘনত্ব অনেক বেশি রয়েছে। প্রথম দিনেই জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশসহ অনান্য মাছ। আর এতে দারুণ খুশি জেলেরা। 
শনিবার সকালে সরেজমিনে সদর উপজেলার মেঘনা পাড়ের তুলাতুলি ও নাছীর মাঝি মাছ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ব্যাপক মাছের আমদানি। সারারাত নদীতে শিকার করা চকচকে রুপালী ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। ঘাটে জেলেদের নৌকা ভিড়লেই আড়ৎদারদের হাক-ডাকে মুখরিত হচ্ছে মাছ ঘাট।

তুলাতুলি এলাকার জেলে জালালউদ্দিন ও ফয়েজউল্লাহ জানান, রাত ১২টার পরেই তারা ট্রলার নিয়ে নদীতে নামেন। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৭০ কেজি ইলিশ পেয়েছেন তার বোটে। যা বিক্রি করেছেন ৩৫ হাজার টাকায়। আগামী দিনগুলোতে এমন মাছের আমদানি থাকলে তারা লাভবান হবেন। একই এলাকার জেলে রফিক মাঝি বলেন, বন্ধের পর প্রথম দিনেই প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সকল জেলেই এখন মাছ শিকারে ব্যস্ত। তার নৌকায় ২০ হাজার টাকার মাছ পাওয়া গেছে। নাছির মাঝি এলাকার কালাম হোসেন বলেন, ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে বেশ। তার জালে ১৫টি পাঙ্গাস পাওয়া গেছে ১ থেকে ৫ কেজি ওজনের।

মেঘনা পাড়ের ভোলার খাল মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো. আল আমিন জানান, সকাল থেকেই ঘাটে প্রচুর ইলিশ মাছ এসেছে। এসব মাছ ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রামের হালি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। ৬০০ থেকে ৯০০ গ্রামের হালি দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। আর এক কেজির ইলিশ হালি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায়। খুচরা বাজারে দাম আরো বেশি থাকায় সকাল থেকেই ঘাটে শহর থেকে অনেক ক্রেতা ভিড় করে ইলিশ ক্রয়ের জন্য।

এদিকে শহরের সবচে বড় ইলিশের খুচরা বাজার নতুন বাজারে দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশসহ অনান্য মাছে সরবরাহ। ক্রেতাও রয়েছে প্রচুর। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষিতে মুখর হয়ে উঠেছে বাজার।
মৎস্য ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন কাজী ও সুরোজ মিয়া বলেন, সরকারের মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম জেলায় কঠোরভাবে পালন হওয়ায় সব ধরনের ইলিশ আমদানি বন্ধ ছিল ২২ দিন। তাই দীর্ঘ বিরতির পর ইলিশ শিকার শুরু হওয়ায় জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। পাশাপাশি পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় তাদের লাভও ভালো হচ্ছে বলে জানান।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বাসস’কে জানান, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৬০টি মাছ ঘাট রয়েছে। অভিযানের ২২ দিন বন্ধ থাকার পর প্রতিটা ঘাটই আজ জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রথম দিনেই বিক্রি হচ্ছে কোটি-কোটি টাকার ইলিশ। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সাগর থেকে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে প্রচুর ইলিশ ছুটে এসেছে। সব মিলিয়ে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে জেলায়। আগামী ১০-১৫ দিন এমন অবস্থা থাকতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *