শুক্রবার, ৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৪শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুই হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৮ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেয়।

লক্ষ্মীপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়ার যুবলীগ নেতা আবদুল হান্নান সুমন (৩২) হত্যায় ৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় দুইজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।

অপর হানিফ হত্যা মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় ৬ জনক খালাস দেওয়া হয়। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

এ দুটি হত্যা মামলার এজাহার ভূক্ত প্রধান আসামী ছিলেন দত্তপাড়া এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. জসিম উদ্দিন। ২০১৫ সালের ৮ জুন প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে খুন হয় সে। ফলে দুটি মামলা থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, যুবলীগ নেতা সুমন হত্যায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, কাউছার (৪৭), খোরশেদ আলম (৪১), সোহেল রানা (৩৭), সোহাগ (৪৪), রাব্বী (৩৭) ও কালা শাহাদাত (৪৪)। তারা সদর উপজেলার দত্তপাড়া, গোপালপুর ও দক্ষিণ মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা।

এ মামলায় খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, বাবুল ওরফে বাবলু ও দত্তপাড়া ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান শামীমের ভাই মানিক এলাহি বাবুল ওরফে আশেক এলাহী। ভিকটিম সুমন উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় নেতা ছিলেন।

মামলা সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সুমন তার চার বছরের ছেলে সাইফ হান্নাকে সাথে করে রিকসাযোগে দত্তপাড়া বাজার থেকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পথিমধ্যে সন্ত্রাসী জসিমের নেতৃত্বে তার উপর হামলা চালানো হয়। এসময় সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় ৮ ডিসেম্বর ভিকটিমের মা সুফিয়া বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চন্দ্রগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) পুষ্প বরণ চাকমা ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে অভিযুক্ত ৮ জনের মধ্যে ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন। অপর দুই আসামীকে খালাস দেন।

অন্যদিকে, ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের গণেশ শ্যামপুর গ্রামে হানিফ হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, দিদার হোসেন (৩২) ও ফারুক হোসেন (৩১)। তারা সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরী গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলায় মো. ইলিয়াস ওরফে ইলিয়াস কোবরা সাজার আওতায় থাকলেও তিনি মারা যাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

খালাস প্রাপ্তরা হলেন, মো. রিপন (৩২), মো. রনি (৩১), ওমর ফারুক (২২), মো. রিয়াদ (২৫), ইসমাইল হোসেন মুন্সি (৩০) ও মো. বাবলু (৩৫)।

এজাহার সূত্র জানায়, চাঁদার দাবিতে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসামিরা হানিফের দুই পায়ে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ১৫ মে হানিফের বোন মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসী জসিমকে প্রধান করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সেই সময়ের দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত ৮ জন আাসমীর মধ্যে দুইজনের যাবজ্জীবন ও ৬ জনকে খালাস দেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ