শনিবার, ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

রায়পুরায় ২ ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী : নরসিংদী রায়পুরায় অসহায় পরিবারের ওপর হামলা ও নির্যাতন করে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে দুই ভাই দলিল লেখক মোতালিব ভেন্ডার ও সেন্টু গংয়ের বিরুদ্ধে।

রায়পুরা উপজেলার অটোচালক মোঃ আসাদ সংবাদকর্মীদেরকে জানান, সেন্টু মিয়া প্রকৃতপক্ষে একজন ভূমিদস্যু। তার খপ্পরে পড়ে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছে। অথচ সে রাজনীতির প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনাও ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ সম্মেলন করলেও প্রশাসন প্রকৃতপক্ষে নিচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু রায়পুরা পৌর এলাকার বাসিন্দা সোহেল মিয়া টাকা দিয়ে জমি কেনার পরও ভূমিদস্যু সেন্টু মিয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ঐ জমি দখল করার চেষ্টা করে। সোহেল একজন সহজ সরল ছেলে। তার সরলতাকে পুঁজি করে সেন্টু মিয়া তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যমে।

এদিকে পৌর এলাকার বাসিন্দা শিল্পী আক্তার সংবাদকর্মীদেরকে জানান, আমাদের এলাকার সম্মানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেন্টু ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বেনামে ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিছুদিন আগেও রায়পুরা এলাকার পৌর বাসিন্দারা এই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিল। কিন্তু তারপরও রাতের আঁধারে সোহেল মিয়ার প্রকৃত জমি ভূমিদস্যুরা রাতের আধারে নিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে সেন্টু মিয়ার নিকট একাধিকবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি তার জমির প্রকৃত কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। মৌখিক কথার ভিত্তিতে উক্ত জমি দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সংবাদকর্মীরা ভূমিদস্যু সেন্টু মিয়াকে তার প্রকৃত মালিকানা কাগজপত্র দেখানোর জন্য বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। একপর্যায়ে তিনি কথার ছলে স্বীকার করেন যে, আমাকে রায়পুরা থানায় সালিশ ডেকেছিল, পৌরসভার মেয়রও আমাকে ডেকেছিল, যাইনি। তিনি কেন যাননি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি।

তার নিকট সংবাদকর্মীরা এই জমির প্রকৃত কাগপত্রাদি চাইলে তিনি কাগজপত্র না দিয়ে উল্টো সংবাদকর্মীদেরকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টাকা দিলেই সংবাদকর্মীরা অন্যের কথা বলে। তিনি নিজের দোষটুকু নিজে দেখতে পারেন না। উল্টো সংবাদকর্মীদেরকে দোষারোপ করেন।

এই জমির মালিক সোহেলকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, নগদ টাকা দিয়ে এ জমি ক্রয় করেছেন তিনি। সেন্টু মিয়া বা অন্য কেউ যদি এই জমির মালিক হয় তাহলে গ্রাম্য সালিশের ব্যবস্থা করা হোক। আমি সমাজ ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যে কোনো সালিশে বসতে রাজি আছি। আমার কাগজপত্র নিয়ে সালিশে বসার ইচ্ছে থাকলেও সেন্টু মিয়া কখনো সালিশে আসেননি। উল্টো ঢাকা- নরসিংদী যাবেন বলে অজুহাত দেখান। নামে বেনামে বিভিন্ন দপ্তরে এই ভূমিদস্যু সেন্টু মিয়া একাধিক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তারা সঠিক কাগজপত্র চাইলে তিনি দিতে পারেন না।

এদিকে পৌর এলাকার বাসিন্দা মিজান মিয়া তার বক্তব্যে বলেন, এই দুই ভূমিদস্যুর কারনে প্রায় সময়ই রায়পুরা বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ সম্মেলন করলেও বিভিন্ন কৌশলে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের সুনাম নষ্ট করে। তারা এতই প্রভাবশালী যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। প্রকৃতপক্ষে নিরীহ মানুষ তাদের নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে।

রায়পুরা পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. জয়নাল মিয়া বলেন, এই রায়পুরা পৌর এলাকায় ২০ বছর যাবত বসবাস করে আসছি। সোহেল প্রকৃতপক্ষে একজন ভালো ছেলে। তার হকের টাকা দিয়ে জমি কিনেছে। কিন্তুু ভূমিদস্যু সেন্টু মিয়া রাতের আধারে অন্যের জমি দখল করে সামানা করতে চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে সোহেল বাধা দিলে তাকে বিভিন্ন মামলা হামলা দিয়ে হয়রানী প্রদান করে। এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের নিকট কামনা প্রকৃত জমি যেনো প্রকৃত মালিকের নিকট হস্তান্তর করে দেওয়া হয়।

এদিকে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, ভূমিদস্যুদের কারনে প্রায় সময়ই নিরীহ মানুষ হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। তারা এতই চালাক চতুর যে নিজেদের অন্তরাল করে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে অন্যের জমি দখল করে নিচ্ছে। প্রকৃত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মনে করি আমরা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *