বৃহস্পতিবার, ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

চিরিবন্দরে ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

খাঁন মো. আ. মজিদ, দিনাজপুর : দিনাজপুর চিরিবন্দর উপজেলার এলএইচবি ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে জমির পাকা ধান, ভুট্টা, আম, লিচু, কলা, মরিচ ও কচুখেত নষ্ট হয়ে দিশেহারা কৃষক।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের হযরতপুর গ্রামের এলএইচবি ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে এলাকার প্রায় অর্ধশত কৃষকের জমির পাকা ধান কাটার সময়ে মাথায় হাত উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ মঙ্গলবার রাতে ভাটার গ্যাসে প্রায় ১৫ বিঘা জমির পাকা ধান, প্রায় ১০ বিঘা জমির মরিচ ও কচুখেত, প্রায় দুই বিঘা জমির ভুট্টাখেতসহ প্রায় শতাধিক গাছের আম লিচু ,কলা ও পেয়ারা নষ্ট হয়ে গেছে।

হযরতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে একরাতে আমার দশ কাটা জমির পাকা ধান পুড়ে গেছে। আমার ধানসহ আশেপাশের অনেকের ধান, ভুট্টা, মরিচ ও কচুর খেত পুড়ে গেছে। ভাটার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আমরা এর কোনো সমাধান পাইনি। ভাটার মালিক যদি আমাদের ক্ষতিপূরণ না দেয় তাহলে আমরা তো মাঠে মারা যাব।

কৃষক নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে মরিচ ও কচু ক্ষেত নষ্ট হয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে মচিরগুলো ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারতাম কিন্তু আর হলো না। ভাটার ধোয়ায় মরিচরে ফুল-ফল সাব মাটিতে ঝরে পড়ে গেছে। মরিচের পাশের খেতের কচুও নষ্ট হয়ে গেছে এখন বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে কি খাব?

কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, আমার এক বিঘা জমির ধান ভাটার কালো ধোয়ায় পুড়ে গেছে। দুই একদিনে ধান কাটব এমন সময় ধানগুলো পুড়ে গেছে। ভাটার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি মালিক খালি সময় দেয় আজ আসবে কাল আসবে আসবে করে আসে না। এখন ধানগুলো কাটতে পারছি না। ভাটার মালিক তালবাহানা করে কাটাচ্ছে। আমরা কৃষকরা তো ক্ষতির মুখে পড়ে গেলাম।

কচুচাষি জয়নাল আবেদিন বলেন, আমি দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে পানি কচু চাষ করেছি। কচু লাগানোর পর থেকে বৃষ্টি না থাকায় সেচ দিয়ে, সার-কীটনাশক দিয়ে খরচ করেছি। এখন আকাশের বৃষ্টি হচ্ছে কচুগুলো বেশ বড় হচ্ছে। একটা কচু বাজারে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। এবারও এমন দামে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখার আশায় ছিলাম। এমন সময় ভাটার বিষাক্ত গ্যানে কচুর গাছ গুলো পুড়ে গেছে।

এলএইচবি ভাটার মালিক লোকমান হাকিম মোবাইল ফোনে বলেন, আমি এ বিষয়গুলো তেমন কিছু জানি না। আমি রোগী নিয়ে ব্যস্ত।

চিরিররবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা মোবাইল ফোনে বলেন, কৃষকদের পক্ষ থেকে এমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কৃষকরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ও চিরিরবন্দর, খানসামা উপজেলার ইটভাটা মালিক সমিতিরে সভাপতি ময়েনউদ্দিন শাহ মোবাইল ফোনে বলেন, আমি বিষয়টা অবগত আছি। বিষয়টা দেখব আমি।

চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম শরীফুল হক মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত না। ওই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *