
মারুফ হোসেন লিয়ন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর সৈয়দপুরে সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিমের অপসারণের দাবিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানরা এক মানববন্ধন আয়োজন করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শহরের শহিদ ডা. জিকরুল হক সড়কে মুক্তিযোদ্ধা অফিসের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনটি আয়োজন করে সৈয়দপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিল।
গত ২০২১ সালে রংপুরের সাইবার ক্রাইম আদালতে দায়েরকৃত একটি মামলায় মরহুম নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডাকে যুদ্ধাপরাধী হিসাবে উল্লেখ করা হয়। মামলাটি তদন্ত করার জন্য আদালত সৈয়দপুর থানাকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক সৈয়দপুর সদর ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা পুলিশ ইন্সপেক্টর আব্দুর রহিম নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডাকে তা তদন্ত প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরবর্তীতে ওই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করা হয়।
এরই প্রেক্ষিতে মামলাটি পুনঃ তদন্ত করতে নীলফামারীর সিআইডির পরিদর্শক রেজাউল করিমকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি তার তদন্ত প্রতিবেদনে যুদ্ধাপরাধী নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডাকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে আদালতে তার প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ খবর স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ সম্প্রতি জানতে পারে। এরই প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষও। তাই সিআইডির এই পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী নারী, পুরুষ ও শিশুরা গতকাল রাজপথে নামে। গড়ে তোলে আধা কিলোমিটার জুড়ে মানববন্ধন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর্জা সালাহউদ্দিন বেগ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল হক সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোজাম্মেল হক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কাউন্সিলের সৈয়দপুর শাখার আহ্বায়ক এ্যাড. সুজাউদ্দৌল্লাহ সুজা, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোনায়মুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, পার্বতীপুরের অধিবাসী ছিলো নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডা। তিনি পার্বতীপুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন বাঙ্গালী নিধনের হোতা। দেশ স্বাধীন হওয়ার প্রাক্কালে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্ততি হিসেবে তিনি সৈয়দপুরে আসেন। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে অবশেষে সৈয়দপুরেই বসতি গড়ে তোলেন। সিআইডির ওই পুলিশ কমকর্তা ঘটনাস্থল পার্বতীপুরে তদন্ত না করে সৈয়দপুরে জন্ম নেয়া ৯০ দশকের বেশির ভাগ উর্দুভাষীদের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। এই তদন্ত প্রতিবেদনে নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডাকে স্বাধীনতার পক্ষের ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।