সোমবার, ১১ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্দোলনে নিহত রাশিদুলের পরিবারের পাশে শুভসংঘ

আতিকুর রহমান, কুড়িগ্রাম উত্তর : আঁখি আকতার আশামণির হাতে বিয়ের মেহেদির রং এখনো শুকায়নি। তবে এরই মধ্যে বিয়ের ২২ দিনের মাথায় তিনি হারিয়েছেন তার স্বামী রাশিদুল ইসলামকে।

গত ৫ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধেী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাশিদুল ইসলাম। সরকারি কোনো সহায়তা না মিললেও অসহায় এই পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘ।

শুক্রবার নিহত রাশিদুলের পরিবারের কাছে বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা তুলে দেন খাদ্যসামগ্রী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ’র উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি তামজিদ হাসান তুরাগ, দৈনিক খবর সংযোগের জেলা প্রতিনিধি মনোয়ার হোসেন লিটন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ছিলেন নিহত রাশিদুলের পিতা বাচ্চু মিয়া ও মা আলেয়া বেগম প্রমুখ।

রাশিদুলের স্থায়ী নিবাস কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের কাঠগীরাই গ্রামে।

তার বাবার নাম বাচ্চু মিয়া। রাশিদুল ঢাকার যাত্রাবাড়ীর আদমজী গার্মেন্টেসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।

গত জুলাই মাসের ১৬ তারিখ দুই পরিবারের সম্মতিতেই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে হয় রাশিদুল ইসলাম (২১) ও আশামণির (১৮)।

রাশিদুলের স্বপ্ন ছিল বিয়ের তিন মাস পর তার স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা। কিন্তু সেই স্বপ্ন হঠাৎ করেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাশিদুলের বাড়িতে এখনো চলছে মাতম। বাড়ির পাশে প্যান্ডেল করে আয়োজন করা হয়েছে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়ার।

রাশিদুলের ভাবি মৌসুমি খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী আলমগীর হোসেনসহ আমরা ঢাকায় যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় থাকি।

আমার স্বামী রিকশা চালান। আমি একটি গার্মেন্টসে কাজ করি। আমার ছোট দেবর ৫ দিন আগে আমাদের এখানে এসেছে। বিয়ে করে আদমজী গার্মেন্টসে সে নতুন চাকরি নিয়েছে। মাত্র ২ দিন ডিউটি করেছে। এর মধ্যে এত কিছু ঘটল। ’


রাশিদুলের স্থী আশামণি বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে রেখে এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি। তিন মাস পরে তার আসার কথা। কিন্ত সে এর আগেই ফিরল লাশ হয়ে। আমি এর বিচার চাই। সামনে আমরা কী হবে জানি না। ’

তিনি আরো বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপকে অনেক ধন্যবাদ এই সময়ে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ’

রাশিদুলের শ্বশুর আকিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ের বয়স কম। সামনে তার আরো জীবন পড়ে রয়েছে। এখন আমরা দুই পরিবার একসঙ্গে বসব তার পরে সিদ্ধান্ত নেব। যেটা করলে ভালো হয় সেটাই আমরা করব। ’

নিহতের পিতা বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘বাবা আল্লাহ তোমারগুলাক ভালো করুক। বসুন্ধরা গ্রুপক ভালো করুক। বাড়ির সব ছোট চেংরাটা এভাবে গেইল। তা হামারগুলা ভাবনাত ছিল না। এখন তো মেয়েটার দিকত হামার দেখা নাগবে। আমরা দুই ঘর একসঙ্গে বসি তারপর সিদ্ধান্ত নিম যে কী করা যায়।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ