
খাঁন মো. আ. মজিদ, দিনাজপুর : দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে হলগুলোতে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এদিকে হল খুলে দেওয়ার আগে গত দুই দিনে হাবিপ্রবির ৯টি আবাসিক হলের মধ্যে ৪টি হল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র। উদ্ধার হয়েছে মদের বোতল, গাঁজা ও মাদক সেবনের সামগ্রীও।
বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান।
জানা যায়, গত ১২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি আবাসিক হল খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ১২ আগস্ট হলগুলো খুলে দেওয়া হয়নি।
এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. সাইফুর রহমান।
সিদ্ধান্ত হয়, হলগুলোতে যাতে শিক্ষার্থীরা নিরাপদে অবস্থান করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নিয়েই শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করানো হবে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন আবাসিক হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আনসার সদস্যরা সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় তল্লাশি শুরু করে।
বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই দিনের অভিযানে চারটি হল থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে মদের, ফেনসিডিলের বোতল ও মাদক গ্রহণের সামগ্রীও।
প্রথম দিন মঙ্গলবার তাজউদ্দীন হলের মাত্র একটি ফ্লোর থেকেই উদ্ধার হয় ১৪৩টি বাঁশের লাঠি, ১৬টি লোহার রড, ২২টি লোহার পাইপ, ৬টি সামুরাই, ২টি লোহার চেইন, খালি মদের বোতল ৩টি ও মাদক সামগ্রী।
বুধবার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল থেকে ৯টি সামুরাই, ৫০টি এসএস পাইপ, ৪০টি বাঁশের লাঠি, ৩৬টি কাঠের লাঠি, ৭২টি রড ও প্লাস্টিকের পাইপ, একটি মদের বোতল এবং গাঁজা ও মাদক গ্রহণের সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের ছাদ থেকেই উদ্ধার করা হয় ৯৬টি সামুরাই ও ৪টি পেট্রল বোমা। পরে এসব রুমগুলোকে সিলগালা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়াও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, তাজউদ্দীন আহমদ হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রুমগুলোতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়।
হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বলেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের মনিটরিং সেলের নেতাদের নিয়ে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ভার্সিটির বাইরে বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল।
তিনি জানান, এসব অস্ত্রশস্ত্র থাকায় শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো নিরাপদ ছিল না। তাই দুদিন ধরে উদ্ধার অভিযান শেষ করেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কোতয়ালী থানার ওসি জানান, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।