শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নান্দাইলে প্রাণিসম্পদ অফিসে ‘ঘুষ সিন্ডিকেট’, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

শফিউল জুয়েল, নান্দাইল(ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা প্রাণি সম্পদ হাসপাতালের ২ কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকরি প্রদানের নাম করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার সিংরইল গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে ওমর ফারুক রোববার নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর নান্দাইল উপজেলার কৃত্রিম প্রজনন টেকনিশিয়ান হিসেবে চাকরির জন্য তিনি দারস্থ হন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের কাছে। তখন একই অফিসের ঘাস সম্প্রাসারণ প্রকল্পের কর্মী খায়রুল ইসলাম মোরাদ ও উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিনের যোগসাজশে ২ লাখ টাকা ঘুষ দেন। বিনিময়ে তারা আশ্বস্ত করেন তাকেই চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু এরপর থেকে প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তাকে নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। বরং টাকা ফেরত চাইতে গেলে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেয়।

তিনি অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করেন, ঘুষের বিনিময়ে বিভিন্ন সময় এই তিন ব্যক্তি কর্মী নিয়োগ করে থাকেন। এমনকি ঘাস সম্প্রসারণ প্রকল্পের খায়রুল ইসলাম মোরাদ স্বীকার করেছেন তিনিও ঘুষের মাধ্যমেই চাকরি পেয়েছেন।

একই অভিযোগ করেন উপজেলার চর কামটখালী গ্রামের মো. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মোকাররম হোসেন মানিক। তার কাছ থেকেও একই পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেয় অভিযুক্ত ৩ জন।

এসব বিষয়ে কথা হয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভুক্তভোগীর সাথে। তারা জানান, তাদের কাছ থেকেও বিভিন্ন সময়ে কৃত্রিম প্রজনন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিবেন বলে ঘুষ নিয়েছেন হারুন অর রশিদ ও জসিম উদ্দিন। একজন ভুক্তভোগীর সাথে জসিম উদ্দিনের ঘুষ গ্রহণ সম্পর্কিত ফোনালাপের রেকর্ডও পাওয়া গিয়েছে। এসব ভুক্তভোগীরা তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা ঘুষ আদায় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তারা এতোদিন চুপ ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে ফোন করা হলে তিনি জানান, ‘ব্যক্তিগত আক্রোশে কেউ আমার প্রতি মিথ্যা অভিযোগ আনতে পারে। এরকম কোনো কিছুর সাথে আমি সম্পৃক্ত না৷’

অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন জানান, ‘আমি নামাজে আছি তাই একটু ব্যস্ত। তবে যারা এই দাবি করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই’।

একইভাবে অভিযুক্ত খায়রুল ইসলাম মোরাদও জানান, তিনি এই অভিযোগের ব্যাপারে কিছু জানেন না। এর সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততাও নেই।

নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পাল জানান, ‘আমি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে’।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ