রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রামেবিতে নার্সিংয়ের পরীক্ষা নিয়ে নাটকীয়তা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শাহ্ সোহানুর রহমান, রাজশাহী : রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) নার্সিং অনুষদের পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে চরম নাটকীয়তা চলছে। সংশ্লিষ্টদের গাফেলতির কারণে চরম অনিশ্চয়তায় প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।

বারবার আন্দোলনে নেমে পরীক্ষার দাবি জানালেও মিলছে না কোনো সমাধান। সর্বশেষ বুধবার দিনভর প্রতিষ্ঠানটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সামনে আবারও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন নার্সিং অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সকাল সাড়ে ১০টায় রাজশাহী নার্সিং কলেজের সামনে থেকে ২৩টি নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিল বের হয়। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সামনে গিয়ে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। অভ্যান্তরীণ মূল্যায়ন পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল দিয়ে ইন্টার্নশিপে বসার ব্যবস্থা করার এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূটি পালন করেন। এসময় ‘যে ভার্সিটি পরীক্ষা নেয় না, সে ভার্সিটি চাই না, ভার্সিটি না চিড়িয়াখানা, চিড়িয়াখানা চিড়িয়াখানা’- এসব স্লোগান দেন তারা। একপর্যায়ে রামেবির ভবনের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিএসসি-ইন-নার্সিং কোর্স সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নানা নাটকীয়তায় এখনো তাদের কোর্স শেষ হয়নি। চরম বৈষম্যের কারণে সারাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে। শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৩ জুলাই অনশন করে পরীক্ষার রুটিন পেয়েছিলেন। ৭ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ জেড এম মোস্তাক হোসেন অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেন। পদত্যাগের কারণে আমরা চরম অনিশ্চয়তায়।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা ও ফলাফল না পেলে তারা ছয় মাসের ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন না। আর এটি ছাড়া আগামী বছরের মার্চে নার্সিং নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না তারা। তাই সেপ্টেম্বরের মধ্যেই পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ প্রয়োজন।

খবর পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ খন্দকার মো. ফয়সল আলমসহ কয়েকজন চিকিৎসক সেখানে এসে কথা বলে যান। আর রামেবির কর্মকর্তারা সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ ডেকে আনেন। পরে রামেবির সহকারী রেজিস্টার মো. রাশেদের নেতৃত্বে রামেবির একটি দল ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসানের সঙ্গে আলোচনা করে উভয়পক্ষ। নতুন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া দেখিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন মহিনুল হাসান।

বিকাল সাড়ে ৫টায় শিক্ষার্থীরা এদিনের মতো কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার আবারও কর্মসূচিতে নামা হবে বলে তারা ঘোষণা দিয়েছেন।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রায়হান আলী বলেন, ‘বারবার আমরা বৈষম্যের শিকার। আমাদের সঙ্গে ছলচাতুরি ও প্রতারণা করা হয়েছে। হয় অভ্যান্তরীণ কমিটির ওপর দায়িত্ব দিয়ে সেপ্টেম্বর মাসেই পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে, অন্যথায় আমাদের আরও কঠোর কর্মসূচি শুরু হবে। আর রামেবি এতে ব্যর্থ হলে এখানে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারি থাকার দরকার নাই। সবাই পদত্যাগ করুক। ৬ মাসের ভার্সিটি বন্ধ থাকুক।’

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ