
মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: নীলফামারীতে ১৭ প্রভাষক মিলে লেখা ও স্বাক্ষরিত এক দরখাস্তে ১৬টি বানান ভুলের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে প্রভাষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের প্রশ্ন এতজন প্রভাষকের স্বাক্ষরিত এক দরখাস্তে কীভাবে এত বানান ভুল হয়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘুরে বেড়ানো ভুলে ভরা সেই দরখাস্তে দেখা যায়, অপসারন (অপসারণ), স্বাক্ষরকারীগন (স্বাক্ষরকারীগণ), অংশগ্রহন (অংশগ্রহণ), ভূগিতেছি (ভুগতেছি/ভুগছি), পরিসিস্থিতি (পরিস্থিতি), শিক্ষকগন (শিক্ষকগণ), ষরযন্ত্র (ষড়যন্ত্র), প্রবাহীত (প্রবাহিত), দুর্নিতি (দুর্নীতি), সত্বেও (সত্ত্বেও), উদ্ভৃত( উদ্ভট) বিষম্য (বৈষম্য), প্রভাষকগন (প্রভাষকগণ) বানান ভুল। তাছাড়াও সেখানে ইং তারিখের পরিবর্তে খ্রিষ্টাব্দ হবে। কম্পিউটার টাইপের পরিবর্তে কম্পিউটার কম্পোজ হবে। এছাড়াও দরখাস্তটিতে সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণ রয়েছে।
ওই স্কুলের নবম শ্রেণী শিক্ষার্থী মেজবা মাহিন বলেন, ১৬ দফা দাবি শিক্ষকদের দেয়া হলে তারা নিজ ইচ্ছায় আমাদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে এবং স্বাক্ষর করেন। তাদের দাবি অভিযুক্ত শিক্ষকগণ যা লিখেছেন তার অধিকাংশই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বখাটে বলে চরম অপমান করেছে বলে অভিযোগ করেন।
আরেক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রাজ বলেন, আমরা জোরপূর্বক কোনো শিক্ষককের স্বাক্ষর নেইনি এবং নেওয়ার চেষ্টাও করিনি। উনাদের হেনস্তা ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। আমরা শিক্ষকদের গালিগালাজ বা কোন ধরনের হেনস্তা করিনি। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যা ও বানোয়াট।
ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১৬ প্রভাষক মিলে অল্প কয়েক লাইনের একটা দরখাস্তে এতগুলো ভুলের বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। দরখাস্তটি পড়ে স্যারদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যারা শিক্ষার্থীদের শেখাবেন তাদের যদি শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রশ্ন থাকে তাহলে তারা কিভাবে শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা প্রদান করবেন?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কামরুজ্জামান স্যার সবার সাথে কথা বলে স্বাক্ষর নেন। সেই সময় আমি তিন বার বের হয়ে আসতে চাইলে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন।’
অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরদানকারী প্রভাষক শিখা রানী সরকার বলেন, ‘অভিযোগ পত্রটি না পড়েই আমি কামরুজ্জামান স্যারের কথায় স্বাক্ষর করি।’
দরখাস্তে এত গুলো ভুলের বিষয়ে প্রভাষক কামরুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কি পরীক্ষা দিছি। এই বিষয়ে আমাকে কি নাম্বার দিবে। এক পর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’