শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দিনাজপুরে গুলিবিদ্ধ রশিদের চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা

খাঁন মো. আ. মজিদ, দিনাজপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন দিনাজপুর শহরের কাটাপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রশিদ। চিকিৎসার খরচ যোগাতে তিন বয়সী সন্তানকে ২৫ হাজার টাকায় অন্যের হাতে তুলে দেয়া হয়।

বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রসাশনের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয় সেই সন্তানকে। এবার আব্দুর রশিদ ও তার সেই সন্তানের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আর্থিক সহায়তা করেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যদের কাছে আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান। এ সময় সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় জানানো হয়, গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদের বাড়িতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়েছে, চিকিৎসার যাবতীয় বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। একইসাথে তারা চাইলে তাদেরকে একটি সরকারী বাড়িতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদ ও তার সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নজরে আসলে বর্তমান সরকারের উপদেষ্টাগণ বিষয়টি নিয়ে সাথে সাথেই তৎপর হন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী, প্রশাসনের বিভিন্ন বিভাগ থেকে সহায়তা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আজকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেয়া হয়েছে। বাইরের দেশ থেকে অনেকেই সহায়তা করতে চেয়েছেন। তাদের একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে সহায়তা পাঠিয়ে তাদেরকে পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট দুপুরে গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়মিত চেকআপ করতে গিয়েছিলেন দিনাজপুরের কাটাপাড়া এলাকার দিনমজুর আব্দুর রশিদ। স্ত্রীকে গাইনি ওয়ার্ডে রেখে নিচে কাউন্টারে টিকিট কাটার সময় হাসপাতালের ভিতরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুর রশিদ। তার পেটে, নাভিতে, পায়ে এবং প্রসাবের রাস্তায় গুলি লাগে। পরে পুরো চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি চলে যান আব্দুর রশিদ।

৩ দিন পর তার পেটে গুলিবিদ্ধ স্থানে পচন ধরলে ও ব্যথা শুরু হলে ৮ আগস্ট তিনি দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতেই হয় অস্ত্রোপচার, এরপর আইসিইউতে। পরের দিন বাড়িতেই ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন আব্দুর রশিদের স্ত্রী রোকেয়া বেগম। সন্তান প্রসবের ৩ দিন পর রোকেয়া বেগম নবজাতক সন্তানকে এক নি:সন্তান দম্পত্তির হাতে তুলে দেন। সেই দম্পতির পরিবার থেকে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। এই ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে বাচ্চাটিকে প্রকৃত মা-বাবার হাতে তুলে দেয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ