মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা গ্রামবাসীর

শাহদাৎ হোসেন লাল, নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাঙন রোধে সরকারি কোন উদ্যোগ না থাকায় নিজ উদ্যোগে প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন গ্রামবাসী। তাদের অভিযোগ, বার বার সরকারি দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোন সারা পাননি তারা। এ অবস্থায় নিজেদের চাঁদার টাকায় প্লাস্টিকের বস্তুা কিনে বালু ভরিয়ে সেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধের চেষ্টা কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমারের শাখা কালজানি নদী পাড়ের বাসিন্দাদের।


সরেজমিনে দেখা গেছে, কেউ প্লাস্টিকের বস্তুায় ভরছেন বালু, কেউ ফেলছেন নদীর পাড়ে। এভাবে ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষার চেষ্টা ভাঙন কবলিতরা। গত ৪ মাস ধরে দুধকুমার নদের অব্যাহত ভাঙন চলছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্তবর্তী শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা গ্রামে। এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে তিন শতাধিক ঘর-বাড়িসহ একরের পর একর ফসলি জমি। এ অবস্থায় ভাঙন কবলিতরা জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডে বার বার যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি তারা। পরে কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে নিজেদের অর্থ দিয়ে সেচ্ছাশ্রমে ভাঙন রোধ করে সম্পদ রক্ষার চেষ্টা তাদের। স্থানীয়দের দাবি, তাদের এ চেষ্টার পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামান্য সহযোগিতা পেলে বন্ধ হবে ভাঙন। আর এতেই রক্ষা পাবে ফসিল জমিসহ ঘর-বাড়ি।


উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ ধলডাঙ্গা এলাকার মনছেদ আলী বলেন, আমাদের এরাকার ভাঙন রোধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে আমরা কাজ করছি। গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে প্লাস্টিকের বস্তুা কিনে বালু ভরে নদীতে ফেলছি। তার পরেও ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।


ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান একেএম ফরিদুল হক বলেন, এই এলাকার দুধকুমার নদ গত ২-৩ মাস ধরে অব্যাহত ভাঙছে। প্রায় ৩শ’র বেশি বাড়ি-ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। কয়েকশ’ হেক্টর ফসিল জমি ফসলসহ নদে চলে গেছে। ভাঙন রোধ করা না হলে তিনটা ক্যাম্প আছে এখানে বিদ্যুৎ আছে সবকিছু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানকার কেটে খাওয়া সীমান্তবাসীর জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।


কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান শিলখুড়ি এলাকায় দুধকুমারের ভাঙনসহ অন্যন্য নদ নদীতেও ভাঙনের কথা স্বীকার করে জানান, বরাদ্দ কিংবা অনুমতি না থাকায় ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না তারা। সার্বিকভাবে কৃষি জমি ও সামান্য বাড়ি ঘরের জন্য কাজ করার অনুমতি পাচ্ছেন না। সরকারি কোনো স্থাপনা হলে কিছুটা কাজের অনুমতি পান বলে জানান তিনি। জেলায় গত চার মাসে দুধকুমারসহ ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তার ভাঙনে বসতভিটা ও ফসলি জমি হারিয়েছে সহস্রাধিক পরিবার। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নিবে সরকার এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগীদের।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ