হানিফ পারভেজ, বড়লেখা(মৌলভীবাজার): দীর্ঘ এক যুগ পর ২৫ সেপ্টেম্বর নিজ এলাকায় ফিরছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক সাজু।
এতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে বড়লেখা উপজেলা, পৌর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এদিন বিকেল ৩টায় পৌরশহরের দক্ষিণবাজার থেকে তাকে নিয়ে বের করবে আনন্দ শোভাযাত্রা।
পরে গণসমাবেশে তিনি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিবেন। ওই সমাবেশে বিএনপির চেয়ারম্যানপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় মামলার শিকার হয়ে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যের কাতারে ছিলেন। দেশে ফিরতে পারেননি টানা প্রায় এক যুগ। তবে দলের কঠিন সময়ে কাতারে অবস্থান করেও মামলা-হামলায় দলের নির্যাতিত, নিপীড়িত নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন।
বড়লেখা উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসহ বিরোধী মতের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, জুলুম-নির্যাতন, খুন, গুমসহ অত্যাচারের স্টিম রোলার চালাতে থাকে। হাসিনার দোসরদের মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতা শরীফুল হক সাজুও দেশে ফিরতে পারেননি। কিন্তু তিনি দেশে থাকা নেতাকর্মীদের দুর্দিনে প্রবাস থেকেও পাশে থেকেছেন। বাড়িয়েছেন সহযোগিতার হাত। প্রায় এক যুগ পর বিএনপির এ নেতাকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-ফেস্টুনে বড়লেখা-জুড়ীর সড়ক এবং উপসড়ক ছেয়ে ফেলেছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শরিফুল হক সাজুর সমাবেশ সফল করতে বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে প্রস্তুতি সভা। অনেক জায়গায় বের হয় আনন্দ মিছিল।
বড়লেখা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রায়হান মোহাম্মদ মুজিব বলেন, বিএনপির দুঃসময়ের কান্ডারী শরিফুল হক সাজু ভাই। আগামি সংসদ নির্বাচনে বড়লেখা-জুড়ী আসনে তার বিকল্প নেই। এই আসনের তৃণমুলের নেতাকর্মীর প্রাণ হচ্ছেন তিনি। ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের সময় যেসব নেতাকর্মী জেলে ছিলেন, তাদের মামলা পরিচালনার ব্যয়, পরিবারের খোঁজখবর নেওয়াসহ সবকিছু তিনি পরিচালনা করতেন।
এছাড়া করোনা, বন্যাসহ সকল দুর্যোগে দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দলের উপর যখন স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকারের স্টিম রোলার চলছিল তখন নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত রাখতে সার্বক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ, মনোবল ধরে রাখা আর্থিক সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন।
জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ও বড়লেখা উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাদির পলাশ বলেন, দলের কঠিন সময়ে বিগত ১৫ বছর সাজু ভাই নেতাকর্মীদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছেন এভাবে আর কেউ দাঁড়ায়নি। বিভিন্ন দুর্যোগ ও হাসিনা বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে আহত নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘদিন পর সাজু ভাইয়ের আগমন উপলক্ষে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। তার আগমনে নেতাকর্মীদের মিলন মেলা বসবে।
বড়লেখা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক এবাদুর রহমান বাপ্পী বলেন, সাজু ভাই বিএনপির নেতাকর্মীদের দুর্দিনে পাশে ছিলেন। যেসব নেতা কর্মী মামলা-হামলায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদের মামলা পরিচালায় আর্থিক সহায়তা ছাড়াও তাদের পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছেন। আমি ও সাজু ভাইয়ের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকারের দোসর আওয়ামী লীগ ক্যাডার ছালেহ আহমদ জুয়েল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে দীর্ঘদিন জেলে রাখে। সাজু ভাইও ওই মামলার কারণে দেশে আসতে পারেননি। কিন্তু প্রবাসে থেকেও দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে দলকে সুসংগঠিত করতে এবং নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে কাজ করেন।
বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান খছরু ও জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রায় এক যুগ পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক সাজু কাতার থেকে ঢাকায় আসেন। ২১ সেপ্টেম্বর বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্রষ্টা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় বিনপির নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য স্বাক্ষাত করেন। ২২ সেপ্টেম্বর তিনি সিলেট আসছেন এবং ২৫ সেপ্টেম্বর নিজ জন্মভূমি বড়লেখায় আগমণ করবেন। তার আগমণে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। বুধবার বিকেলে উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিবেন। উক্ত গণসমাবশে বিএনপির চেয়ারম্যানপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।