মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পুঠিয়ায় খেজুর রস রাখার মাটির পাত্র তৈরি ও বিক্রির ধুম

শাহ্ সোহানুর রহমান, রাজশাহী : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় খেজুরের রস সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হওয়া মাটির পাত্র নাড়ি বা ভাঁড় নামে গ্রামে পরিচিত। এখন কুমারপাড়ায় মাটির এই নাড়ি বা ভাঁড় তৈরির ও বিক্রির ধুম পড়েছে ।

হেমন্তের শিশিরভেজা আর হালকা ঠাণ্ডা জানান দিচ্ছে শীত আসছে। খেজুর গাছ থেকে নামবে মিষ্টি রস, গাছিরা খেজুরগাছ প্রস্তুত করেছেন। তাই পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন কুমার পাড়ার চলছে নাড়ি বা ভাঁড় তৈরির ব্যস্ততা। পুঠিয়ার ঝলমলিয়া পালপাড়া,কানাই পাড়া পালপাড়া ছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য মাটির তৈরি পাত্র পাওয়া যায়।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, তৈরি হচ্ছে খেজুর গাছে পাতার জন্য নাড়ি বা ভাঁড়। মৌসুমের শুরুতে কুমোরপাড়ার নারী-পুরুষরা সবাই এখন আসন্ন শীতের খেজুর রস সংগ্রহের মাটির পাত্র তৈরি করছেন দিনের বেশিরভাগ সময়। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একদিকে চলছে কাদামাটির তৈরি পাতিল রোদে শুকানো অপরদিকে রাত থেকে চলছে বিশাল চুল্লিতে আগুনের তাপে পোড়ানো। এদিকে দিনে দিনে খেজুর গাছের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে তাই চাহিদা কম হলেও সীমিত লাভে বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতারাও ছুটে যাচ্ছেন তা কিনতে। খেজুরগাছ পরিচর্যা শেষে রস নেওয়ার জন্যে গাছে বাঁধবে মাটির নাড়ি বা ভাঁড়। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে থেকে শুরু করে কুমোরের নিজ বাড়ি থেকেই ক্রয় হচ্ছে মাটির এ সকল পণ্য।

ঝলমলিয়া পালপাড়া গ্রামের অধীর পাল বলেন, ২০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন আকার ভেদে ৬০ টাকা পর্যন্ত এবার মাটির নাড়ি বা ভাঁড় বিক্রয় হচ্ছে। তবে গত বছরে তুলনায় এ বছরে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে মাটির কলস গুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা করে।

পুঠিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় আমাদের গ্রামটি হওয়ায় প্রতিদিনই আশেপাশের উপজেলা থেকে ক্রেতারা আসছেন এবং তারা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন।

এ পেশায় আগের মতো লাভ হয় না, বংশের ঐতিহ্য ধরে রেখেছি মাত্র। চাহিদা কম থাকায় দাম অনেক কম, এই ব্যবসা বাড়াতে পারিনি পূর্বের দামেই বিক্রি করছি। তবে এই মৌসুমে শীতের আমেজ আগেভাগেই তাই বেচাকেনা অনেক ভালো হবে বলে আশা করছি।

বাঘা উপজেলার নারানপুর গ্রামের ক্রেতা বিনয় খলিফা বলেন, গুড় তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাটির নাড়ি বা ভাঁড়, ক্রয়ের জন্যে এসেছি। এ বছর ভালো মানের নতুন নাড়ি বা ভাঁড় একটু বড় আকারের গুলো ৩০ থেকে ৬০ টাকা প্রতিটি হিসেবে ক্রয় করছি। খুব একটা দাম বৃদ্ধি পাইনি বলে মনে করেন এই ক্রেতা।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ