শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আ’লীগের যখন পতন হয়, তখন শোচনীয়ভাবে পতন হয়: অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু

মিফতাহুল ইসলাম,পীরগঞ্জ (রংপুর): দীর্ঘ ১৭ বছর সেই দিনের আলোচনা বাংলাদেশের কোনো জনসভায়, কোনো মিছিলে, কোনো পত্রিকায়, কোনো গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়নি। আওয়ামী লীগ যখনই রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসে তখনই বাংলাদেশের যে মৌলিক অধিকারকে গলা টিপে হত্যা করে দেয়া হয়। মহান স্বাধীনতার উষালগ্নে বাংলাদেশের মানুষ যখন গণতন্ত্রের স্বপ্ন দিয়ে ভোট দিয়েছিল আওয়ামী লীগকে, পাকহানাদার বাহিনী ও পশ্চিমা শাসক গোষ্টি সেই ভোটকে সম্মান না জানিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। ৩০ লাখ মানুষ শাহাদত বরণ করেছেন, ২ লাখ মা-বোন ইজ্জত দিয়েছিল। কিন্তু সেই স্বাধীনতা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া লাখো লাওসো কিউসেব পানি রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার মানুষের রক্তে।

বৃহস্পতিবার পীরগঞ্জের শহীদ মিনার মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক মন্ত্রী লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কিন্তু সেই স্বাধীন বাংলাদেশে দেখা গেল আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় বসলেন আবারও ওই গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে দিলেন, পত্রিকার গলা টিপে দিলেন, মানুষের বাক স্বাধীনতা ধ্বংস করে দিলেন, মানুষ যখন কথা বলে তখন রক্ষি বাহিনীর জন্ম দিলেন, নির্বিচারে গুলি করলেন, ফলশ্রুতিতে সারা বাংলাদেশ একটি শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পরিনত হলো। ৩০ হাজার বামপন্থি সূর্য সন্তানকে অকাতরে সেদিন ওই শেখ মুজিবের রক্ষি বাহিনী, গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনে কোন সময় সুযোগ সাংবিধানিক কোন উপায় ছিল না, শেখ মুজিব নিজেকে আজীবনের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করলেন, গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল সেই বাংলাদেশকে যখন গণতন্ত্রহীন করে দেয়া হলো, ক্ষমতার পটপরির্বতের কোনো উপায় ছিল না। যার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট অনিবার্য হয়েছিল এই ঘটনার। যে ঘটনাকে আমরা মানতে পারি না, বিশ্বাস করি না, কিন্তু তাদের কর্মফলে এই ৭৫ এর ১৫ আগস্টের জন্ম হয়েছিল।

দুলু বলেন, আমরা দেখেছি ৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সকালে এক সরকার, বিকেলে এক সরকার। আমরা দেখলাম বাংলাদেশের সেই দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলো, যার কারণে এটাকে বলা হয় সিপাহি জনতার বিদ্রোহ হয়েছিল সেদিন, জিয়াউর রহমানকে বন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত করা হলো। জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সারা বিশ্বের মধ্য উঁচু জায়গায় অধিষ্ঠিত ত হলো। এটি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্রের কাছে ভালো লাগে নাই। জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের যখন পতন হয়, তখন শোচনীয়ভাবে পতন হয়। ৭৫-এ যখন আওয়ামী লীগের পতন হয়েছিল, জানাজা পড়ার লোক ছিল না। একই ঘটনা হয়েছে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে। এই রংপুরের পবিত্র মাটি থেকে আবু সাঈদের বীরদর্পে তাজা বুকের বুলেটের সামনে দাড়িয়ে এই শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। প্রথম হয়েছে ৭৫ এর ৭ নভেম্বর আওয়ামী লীগের পতন হয়েছিল নিশ্চিহ্ন হয়েছিল আওয়ামী লীগ। ২১ বছর ক্ষমতার বাইরে পড়েছে। জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে আনার অনুমতি দিয়েছিল এবং আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার অনুমতি দিয়েছে। আবার পতন হয়েছে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে, ফলে আওয়ামী লীগ আবারও নিশ্চিহ্ন হয়েছে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চাই, যে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষ যাকে খুশি নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।

দুপুরে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মাহমুদুন নবী চৌধুরী পলাশের সভাপতিত্বে রংপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম প্রধান বক্তা, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগরের আহবায়ক সামছুজ্জামান সামু বিশেষ অতিথিসহ জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ ব্কতব্য রাখেন ছিলেন। শেষে ১৫ সহস্রাধিক মানুষের অংশগ্রহণে মিছিল উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ