বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিবগঞ্জে ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী নবান্নের মাছের মেলা

মিনহাজ আলী, শিবগঞ্জ (বগুড়া): বগুড়ার শিবগঞ্জে নবান্ন উপলক্ষে মাছের মেলা শুরু হয়েছে। ৩শ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলার মূল আকর্ষণ বড় মাছ। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে আজ ২রা অগ্রহায়ণ। এ দিন বাঙালীরা নবান্ন উৎসব পালন করে। এ উৎসব কেন্দ্র করে প্রতিবছর শিবগঞ্জের উথলী বাজারে মাছের মেলা বসে।

রোববার সকাল থেকেই বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতারা বড় মাছ কেনাবেচার জন্য মেলায় ভিড় জমিয়েছেন। মেলায় এক দিনে কয়েক কোটি টাকার মাছ বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

নবান্ন উৎসব ঘিরে উথলী, রথবাড়ী, ছোট ও বড় নারায়ণপুর, ধোন্দাকোলা, সাদুল্লাপুর, বেড়াবালা, আকনপাড়া, গরীবপুর, দেবীপুর, গুজিয়া, মেদেনীপাড়া, বাকশন, গণেশপুর, মহাস্থান, মোকামতলা, পাকুড়তলা, রহবল শিবগঞ্জসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে রয়েছে নানা আয়োজন। প্রতিটি বাড়িতেই মেয়ে-জামাইসহ আত্মীয় স্বজনদের আগে থেকেই নিমন্ত্রণ করা হয়। পরিবারের সবাইকে নিয়ে তারা নতুন ধানের নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোরেই মেলায় বড় মাছ নিয়ে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শতাধিক দোকানে বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, ব্রিগেড কার্প, ব্লাড কার্পসহ নানা রকমের মাছ বিক্রি হচ্ছে। মেলায় রুই, কাতলা ও চিতল মাছ ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও মাঝারি আকারের মাছ ৩০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ৩০০-৪৫০ টাকা দরে ব্রিগেড ও সিলভার কার্প মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে নবান্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নতুন আলু, ফুল কপি, বাঁধা কপি, কেশুর এবং মিষ্টি আলু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের মিঠাই মিষ্টির দোকান ও ছোটদের খেলনা ও নাগরদোলা বসছে।

স্থানীয় উথলী গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি দাদার কাছ থেকে শুনেছি প্রায় ৩শ বছরের পুরোনো এ মেলা। রাত ১২টার পর থেকেই শুরু হলেও ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমে ওঠে এ মেলা। রায়হান আলী নামে আরেকজন বলেন, নবান্ন উপলক্ষে এখানে এ মেলা বসে। এদিন আমাদের বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হয়। মূলত তাদের জন্যই বড় বড় মাছ কিনতে মেলায় আসছি।

মাছ বিক্রেতা নারায়ণপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াহাব জানান, মেলায় ছোট-বড় মিলে শতাধিক মাছের দোকান বসেছে। প্রত্যেক বিক্রেতা অন্তত ৫ থেকে ১০ মণ করে মাছ বিক্রি করেন। মেলায় মাছ সরবরাহের জন্য সেখানে রাত থেকে ১৫-২০ টি আড়ৎ খোলা হয়। সেসব আড়ৎ থেকে স্থানীয় বিক্রেতারা পাইকারি দরে মাছ কিনে মেলায় খুচরা বিক্রি করেন। ক্রেতারা বলছেন গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছের দাম বেশি।

শিবগঞ্জের মোকামতলা চাইল্ড হ্যাভেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ৩শ বছরের এই পুরোনো মেলায় সূর্যদয়ের পর থেকে রাত পর্যন্ত মাছ কেনাবেচা হবে। এবার মাছের আমদানি ভালো। আশা করি কোটি টাকার বেশি মাছ বিক্রি হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ