বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম: চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন দেশের প্রত্যেক নাগরিক, ব্যক্তি বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান তার সামর্থ্যের মধ্যে রাষ্ট্রকে ভ্যাট প্রদান করবেন। সেই টাকায় জনগণের মৌলিক অধিকার অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান নিশ্চিত করতে হবে। ভ্যাট আদায় করতে গিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠান ফাঁকি দিচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরের রেডিসন ব্লু বে ভিউর মেজবান হলে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সাপ্তাহর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের কমিশনার মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক একেএম নুরুল হুদা আজাদ, চট্টগ্রাম কর অঞ্চল -১ এর ড. মো. সামছুল আরেফিন, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট (আপিল) কমিশনারেটের কমিশনার মো. মাহফুজুল হক ভূঁঞা, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. জাকির হোসেন এবং কাস্টমস ও কমিশনারেটের কমিশনার মো. শফি উদ্দিন অংশগ্রহণ করেন। চসিক মেয়র আরও বলেন ভ্যাট আদায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত করা দরকার। কোন নাগরিক ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে কিনা তাও নজরে আনা জরুরি।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ভ্যাট আহরণে যেসব সমস্যা আছে, তা থেকে মুক্তির পথ হলো অটোমেশন। অটোমেশন সিস্টেম পুরোপুরি চালু করলে ভ্যাট আহরণ প্রক্রিয়া ও আহরণ সহজ হবে।’
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক একেএম নুরুল হুদা আজাদ।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নে অক্সিজেন রাজস্ব অর্জনে সকলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকলের সম্পৃক্ততা ও অবদান স্বীকার করে এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে’।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে ১০ জুলাই এ ভ্যাট দিবস করা হলেও সে সময় আমাদের ব্যস্ত থাকা এবং বৃষ্টি-বাদলের কারণে দিবসটি সঠিকভাবে করা সম্ভব হতো না। তাই এটা ১০ ডিসেম্বরে নিয়ে আসা হয়েছে।’
একেএম নুরুল হুদা আজাদ বলেন, ‘আগে আমরা ভ্যাট সিস্টেমে ছিলাম না। সেলস্ ট্যাক্স করা হতো। যেটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান স্যারের পরিকল্পনায় ভ্যাট আদায় শুরু হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ভ্যাট আহরণ ১৯৯১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কম চ্যালেঞ্জের নয়। আদর্শ ভ্যাট ব্যবস্থা চালু করতে গিয়ে আমাদের এখনও স্ট্র্যাগল করতে হচ্ছে।’
ভ্যাট আহরণে রাষ্ট্রের সুশাসনের গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ভ্যাট দেওয়ার প্রবণতা নেই বললেই চলে। মিষ্টির দোকান থেকে আমরা কত দ্রুত আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাবো, সেটাই চিন্তা করি। কিন্তু এখানে যে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে তা আমরা ভাবি না। এ জন্য ভ্যাট আহরণকারী কর্মকর্তারা বেশি আগ্রাসী হয়ে ওঠে। এর একটা কারণ হতে পারে সুশাসন। আমাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে কেউ যদি বাইরের দেশে তিনশ বাড়ি করে, আমরা স্বাভাবিকভাবেই ভ্যাট দেওয়ার আগ্রহ হারাই। তাই সুশাসনের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘ভ্যাট আহরণে যেসব সমস্যা আছে, তা থেকে মুক্তির পথ হলো অটোমেশন। অটোমেশন সিস্টেম পুরোপুরি চালু করলে ভ্যাট আহরণ প্রক্রিয়া ও আহরণ সহজ হবে।’
ভ্যাট ব্যবস্থা চালু করতে এখনও স্ট্র্যাগল করতে হচ্ছে ‘ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে জাতীয় ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ।