মো. রাশেদুল ইসলাম, কচাকাটা (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে শীতকালীন সবজি চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা। সবুজ সবজিতে এখন ভরে উঠেছে চরাঞ্চল। ইতোমধ্যেই স্থানীয় হাট-বাজারে উঠছে এসব আগাম সবজি এবং দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে ফুটছে হাসি।
মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সবুজ সবজির সমারোহ। সবজির বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে যেন হাসির ঝলক। শীতকালীন আগাম সবজি বাজারে তুলতে শুরু করেছেন তারা। মাঠে সবজির পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চাষিরা লাভবান হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এসব সবজি চাষে খুব বেশি আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না। তুলনামূলকভাবে মূলধনও কম লাগে। কিন্তু রোগবালাই দমনে সবজিতে কীটনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়। স্বল্প সময়েই সবজি বিক্রি উপযোগী হয়ে ওঠে। প্রায় দিনই বাজারে বিক্রি করা যায়, যা অন্য ফসলের বেলায় সম্ভব নয়। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালো। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই এ অঞ্চলের কৃষকরা লাভজনক মনে করছেন। তাই দিনদিন সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
হাসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা রাজু মিয়া বলেন ‘দুইবিঘা জমি লিজ নিয়ে ফুলকপি চাষ করেছি। ইতিমধ্যে ফুলকপি তুলে বাজারে বিক্রি করা শুরু করে দিয়েছি। বিঘা প্রতি ফুলকপি আবাদ করতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এখন একমন ফুলকপি বিক্রি করতেছি ১৫শ’ টাকা। বাজারেও এটার চাহিদা আছে।’
বাঁধাকপি চাষি আলামিন হক বলেন‚ আমি বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছি তার মধ্যে মরিচ, বেগুন, আলু, বাঁধাকপি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশা করছি কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে।
চলতি বছর কুড়িগ্রাম জেলার ৯টি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের ১৩শ’ ৭ হেক্টর জমিতে সবজি চাষিরা লালশাক, পুইশাক, পালংশাক, ঢেঁড়স, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, শিম, মিষ্টি কুমড়া ও বরবটি আবাদে এখন ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন। উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও আগাম শীতকালীন সবজির বাজার দর ভালো পাওয়ায় এ আবাদে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এরই মধ্যে যেসব উৎপাদিত শীতকালীন সবজি বাজারে বিক্রি করছে, সেগুলোর ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুঁটে উঠেছে তাদের চোখে মুখে।
নাগেশ্বরী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার হোসাইন জানান, চলতি মৌসমে জেলায় প্রায় ১৩শ’ ৭ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত সবজি জেলার সবজি চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত সবজি ঢাকাসহ দেশের অন্য জেলাতে সরবরাহ করা হবে। কৃষি বিভাগের লোকজনের নিয়মিত মনিটরিংয়ে আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার বেড়েছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বাড়ায় কৃষকদের মুনাফাও বেড়েছে কয়েকগুণ।