বুধবার, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

রায়পুরায় ভ্রাম্যমান আদালতকে লক্ষ করে সন্ত্রাসীদের গুলি

খন্দকার শাহ নেওয়াজ, রায়পুরা:

প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন যাবত বালু খেকোরা অবৈধভাবে নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে।

একাধিকবার জেল জরিমানা করা হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছেনা এসব বালু দস্যুদের। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে বিভিন্ন সময় রাতেও নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে।

এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ ও স্থানীয়দের অভিযোগের পর নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করতে গেলে প্রশাসন, পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের দুটি স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের শেষ সীমান্তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার সময় মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবর্ষণের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে জানান রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা।

মোবাইল কোর্টের অভিযানে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে একটি ড্রেজার মেশিনসহ দুইজনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সময় পাশের একটি ইটভাটার পাশে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। সেখানে এগিয়ে গেলে দুটি স্পিডবোট লক্ষ্য করে দূর থেকে গুলিবর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। স্পিডবোটের একটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা, সহকারী কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ছিলেন। অন্যটিতে ছিলেন স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক। গুলির শব্দ শুনে চালক স্পিডবোট দুটি ঘুরিয়ে সবাইকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন।

রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, গুলিবর্ষণের ঘটনায় মামলা করা হবে। জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। বালু খেকোদের হাত থেকে মেঘনার আশপাশের এলাকার মানুষদের বাঁচাতে হলে ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স যেমন কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতায় অভিযান পরিচানা করতে হবে। এই বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাব।

তিনি আরো বলেন, উপজেলার চরাঞ্চলে বিপুল পরিমানে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। ইতিমধ্যে এনিয়ে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বড় ধরনের অভিযান চালানো হবে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অন্তত ২০-৩০টি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয়। শত শত বালুবাহী বাল্কহেড (বালু বোঝাই স্টিলের নৌকা) দিয়ে বালু অন্যত্রে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। অস্ত্রধারী বালু দস্যুদের আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের ভয়ে এলাকার কেউ তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায় না। নদীর তীরবর্তী লোকালয় থেকে কাটিং ড্রেজার এর পরিবর্তে নিষিদ্ধ চুম্বক ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে প্রতিবছরই নদী ভাঙনে শতশত বাড়িঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ