
পারভেজ আলম আদেল, স্টাফ রিপোর্টার: স্থায়ী প্রতিরোধ না থাকায় মেঘনার করাল গ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ও চুন্টা ইউনিয়নে মেঘনা নদীর ভাঙন এখন নিয়মিত দুর্যোগে পরিণত হয়েছে।
প্রতিদিন নদীর করাল গ্রাসে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চাতালকলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। অথচ বছর পেরিয়ে গেলেও টেকসই কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানিশ্বর ইউনিয়নের পালপাড়া, সাখাইতি, সোলাবাড়ি ও লায়ারহাটি এবং চুন্টার আজবপুর ও নরসিংহপুর গ্রামজুড়ে নদীভাঙনের তাণ্ডব চলছে। আতঙ্কে দিন পার করছেন শত শত পরিবার। নদীর পাড় ঘেঁষা ঘরবাড়িগুলো ভেঙে পড়ছে, নদীগর্ভে মিশে যাচ্ছে সবকিছু।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানিশ্বরের ছয়টি গ্রামের হাজারো মানুষ নদীভাঙনের হুমকির মুখে। এই এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক চাতাল ও মিল থাকলেও এরইমধ্যে প্রায় ২০টি চাতাল এবং শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর রহমান জানান, ২০২১ সালে পানিশ্বর এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও তার অনুমোদন মেলেনি। চুন্টার আজবপুর এলাকায় অস্থায়ী প্রতিরোধ হিসেবে ৪ হাজার ৫৯০টি জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, চুন্টা ও পানিশ্বর এলাকার ভাঙনপ্রবণ স্থানগুলো একাধিকবার সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়েছে। আজবপুরে জিওব্যাগ ফেলার পাশাপাশি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দেড় লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। পানিশ্বর এলাকায় স্থায়ী প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
নদী ভাঙনের কারণে এসব এলাকার শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সাধারণ জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, বারবার আবেদন করেও কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা না আসায় তারা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এখনই যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পুরো অঞ্চলই বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।