মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

মাভাবিপ্রবির পর্দা কর্ণার নিয়ে অসন্তুষ্ট নারী শিক্ষার্থীরা

সমাপ্তী খান, ‎মাভাবিপ্রবি: মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় একটি পৃথক, নিরাপদ ও পর্দাবেষ্টিত কর্ণার স্থাপনের দাবি জানানোর প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছে পর্দা কর্ণার।
কিন্তু এই পর্দা কর্ণারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নারী শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি পর্দা কর্ণারের নামে আমাদের সাথে প্রহসন করেছে প্রশাসন। আমরা চেয়েছি নিরাপদ আশ্রয় তারা দিয়েছে বাঁশের বেড়া।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার এক পাশে আনুমানিক ছয় ফিট উচ্চতার বাঁশের তৈরি একটি অস্থায়ী পর্দা কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। বাঁশ দিয়ে তৈরি কর্ণারটি তৈরী হলেও শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার সঙ্গে এর বাস্তবতা মিলছে না।
অনেক শিক্ষার্থীই এ উদ্যোগকে লোকদেখানো ও অস্থায়ী সমাধান হিসেবে দেখছেন। তাঁদের অভিযোগ, একটি ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে পর্দাশীল মেয়েদের আলাদা খাবার জায়গা তৈরীর দাবি থাকলেও, প্রশাসন সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে এভাবে দায়সারা একটি পর্দা টানিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছে।
আরও এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই অস্থায়ী কর্ণারে কোনো সুবিধা নেই, এর ফাকা দিয়ে যে কাউকেই দেখা যায়, ফলে আমাদের পর্দা বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এর ভেতরে নেই পর্যাপ্ত জায়গা কিংবা উপরে ফ্যানের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাও নেই। এমন উদ্যোগে আমরা সন্তুষ্ট নই।
আইসিটি বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী খাদিজা আরেফীন মিম জানান, নারী শিক্ষার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা একটি পর্দাসম্মত  ‘আল আসলামিয়া পর্দা কর্ণার’ স্থাপনের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু যেটি স্থাপন করা হয়েছে, সেটি একটি হালকা বেতের পার্টিশন, যার ফাঁক দিয়ে পাশ থেকে সহজেই ভেতরের দৃশ্য দেখা যায়। এটি আমাদের চাহিদা পূরণ তো করেনি, বরং নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অস্বস্তিকর ও অনিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেছে। আমরা আমাদের স্মারকলিপি তে যা দাবি তার পরিপন্থি।
তিনি আরও জানান, আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই এই অস্থায়ী ছাউনিটি হয়তো বাহ্যিকভাবে একটি দাবি পূরণের চিত্র তুলে ধরছে, কিন্তু বাস্তবে এটি কার্যকর কোনো সমাধান নয়। এটি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য মর্যাদাপূর্ণ, নিরাপদ এবং মানানসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে একেবারেই উপযোগী নয়। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে বিষয়টির পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি, যেন একজন নারী শিক্ষার্থীর প্রাপ্য সম্মান ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রেখে একটি স্থায়ী ,বাস্তবসম্মত ও কার্যকর ‘পর্দা কর্ণার’ স্থাপন করা হয়।
সাধারণ নারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা প্রশাশনের কাছে একটি নিরাপদ, স্থায়ী পর্দা কর্ণারের দাবি জানাচ্ছিলাম। দাবি মেনে ও নিয়েছিলেন। কিন্তু পর্দা কর্ণার নামে আমরা  পেয়েছি একটা বাঁশের তৈরি বেড়া। বেড়ার ফাঁকে অসংখ্য ছিদ্র, দূর থেকে সহজেই ভিতরের কারো উপস্থিতি স্পষ্ট বুঝা যায়। বেসিনে যাওয়ার পথে সহজেই ভিতরের কাউকে দেখে যেতে পারবে। মাত্র সাড়ে ৫ ফিট উচ্চতার যে কেউ ভিতরের সব  দেখতে পারবে। ভিতরে সহজেই যেকোনো ছেলে মেয়েরা প্রবেশ করতে পারবে। কোনো নিরাপত্তা নাই। বাঁশের এই বেড়াটা এতোটাই অস্থায়ী ১ মিনিট ও লাগবে না সরাতে। এটা একটা প্রহসন ছাড়া কিছু না, সাতমাস ধরে প্রহসন চলছে। একটা শিক্ষার্থী বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে ন্যায্য, যৌক্তিক বিষয়ে প্রশাসনের এইরূপ আচরণ মেনে নেয়া যায় না।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী বলেন, আমার হাতে যতটুকু ছিল আমি করার চেষ্টা করেছি। এটি আগের ভিসি স্যারের রুমের সামনে ব্যবহৃত হত তাই আমরা এটিকে এখন ব্যবহার করেছি। আমার অফিসের কাজ জায়গা নির্ধারণ করা। কোন কাজ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া আমার অফিস বাস্তবায়ন করতে পারে না। এই পর্দা কর্ণারটিও ভিসি স্যার ও শিক্ষার্থীকল্যাণ পরিচালক স্যারের অনুমতি সাপেক্ষে হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের কোন দাবি থাকলে প্রশাসনকে জানাতে পারে।
শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক   অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম জানান, আমরা এটার ফাঁকা জায়গাগুলো কালো কাপড় দিয়ে বন্ধ করে দিব। পর্দা কর্ণারের নাম নিয়ে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ