
যায়যায়কাল ডেস্ক: ‘ফিলিস্তিন ২’ নামের হাইপারসনিক ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা।
মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইরান সমর্থিত হুতিরা তেল আবিবের প্রধান বিমানবন্দরে শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে চলতে সক্ষম অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক ভিডিও বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন।
এএফপির প্রতিবেদন মতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক্সে পোস্ট করে ওই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি জানায়।
এক্স বার্তায় দাবি করা হয়, ‘ইয়েমেন থেকে আসা একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী’।
তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় উল্লেখিত পোস্টটি এক্সে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আইডিএফের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউণ্টে দেওয়া বার্তায় বলা হয়েছে , ইয়েমেন থেকে হুতিরা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েলের একাধিক এলাকায় আকাশ হামলার সতর্কতাসূচক সাইরেন বেজে উঠেছে।
আর্মি রিকগনিশন ডট কম ও ওয়াইনেটনিউজ ডট কম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইরানের কারিগরি সহায়তায় ইয়েমেনের হুতিরা ফিলিস্তিন ২ ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ করেছে।
এই ক্ষেপণাস্ত্রে তরল জ্বালানির বদলে সলিড ফুয়েল (কঠিন জ্বালানি) ব্যবহার হয়।
এর পাল্লা দুই হাজার ১৫০ কিলোমিটার। এটি ৫০০ কেজি ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম।
এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৬ মাক হতে পারে। ইরানের ফাতেহ-১১০ মডেলের ক্ষেপণাস্ত্রের আদলে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
এতে অত্যাধুনিক গাইডেন্স, প্রপালশান ও দিক বদলের প্রযুক্তি রয়েছে। এটি সহজেই ইসরায়েলের আয়রন ডোমের মতো সুরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
ওই হামলায় এক হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন ২৫১ জন মানুষ।
সেদিনই গাজায় প্রতিশোধমূলক নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নারী ও শিশু।
গাজার যুদ্ধের শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়িয়ে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলে ধারাবাহিকভাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি, লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ইসরায়েল সমর্থিত বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলেও বাধার সৃষ্টি করেছে হুতিরা।
হুতিদের ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বেশ কয়েকবার আকাশ হামলা চালিয়েছে মিত্রবাহিনী।
একই সঙ্গে গত দুই বছরে ইয়েমেনে তথাকথিত হুতি স্থাপনাগুলোতেও অসংখ্যবার বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
গত ৪ মে একই বিমানবন্দরে নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল হুতিরা। সাম্প্রতিক সময়ে সেটাই ছিল বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে হুতিদের প্রথম সফল হামলার ঘটনা।
ওই হামলায় ছয় জন আহত হন।