বৃহস্পতিবার, ২৩শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৭ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

বেলুন উড়িয়ে শেখ হাসিনার পলায়ন উদযাপন

যায়যায়কাল প্রতিবেদক: মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২৫ মিনিট। একসাথে আকাশে উড়ল ‘হেলিকপ্টারের আদলে’ শতাধিক বেলুন। সঙ্গে হাজারো মানুষের কণ্ঠে স্লোগান ওঠে- ‘পালাইছে রে পালাইছে, শেখ হাসিনা পালাইছে’।

এভাবেই মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বেলুন উড়িয়ে, স্লোগানের ধ্বনিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘শেখ হাসিনার পলায়ন’ মুহূর্তটি উদযাপন করা হয়।

অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের বর্ষপূর্তির দিনটির রাষ্ট্রীয় উদযাপন হচ্ছে। গান, কনসার্ট, ড্রোন শোসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি ও সংসদ সচিবালয় যৌথভাবে। এই অনুষ্ঠানমালা সবার জন্য উন্মুক্ত।

এই আয়োজনেই বিকালে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই অনুষ্ঠানে ঢাকায় লোকসমাগম ঘটাতে আট জোড়া ট্রেন ভাড়া করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

দিনব্যাপী এই আয়োজন শুরু হয় বেলা ১২টা ১০ মিনিটে মঞ্চে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর দেশের গান পরিবেশনা দিয়ে।

তারা একে একে পরিবেশন করে ‘এই দেশ আমার বাংলাদেশ’, ‘আয় তারুণ্য আয়’, ‘জীবনের গল্প’, ‘ওমা আর কেঁদো না’, ‘যাঁদের জন্য পেলাম আবার নতুন বাংলাদেশ’, ‘জারিগান’সহ কয়েকটি গান।

এরপর মঞ্চে আসে ‘কলরব শিল্পীগোষ্ঠী’। তারা পরিবেশন করে ‘তোমার কুদরতী পায়ে’, ‘দে দে পাল তুলে দে’, ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা’, ‘ইঞ্চি ইঞ্চি মাটি’ ও ‘দিল্লি না ঢাকা’।

কণ্ঠশিল্পী নাহিদ পরিবেশন করেন ‘পলাশীর প্রান্তর’ ও ‘৩৬ জুলাই’ গানগুলো।

‘নোঙর তোল তোল’, ‘তুমি প্রিয় কবিতা’, ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘চল চল’ ও ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’ গানগুলো পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী তাশফি।

এই আয়োজনে পর্যায়ক্রমে ব্যান্ডদল আর্টসেল, ওয়ারফেইজ, এবং শূন্য’র গান পরিবেশন করার কথা রয়েছে। এছাড়া স্পেশাল ড্রোন ড্রামাসহ নানা আয়োজন হওয়ার কথা আছে। সবশেষে মঞ্চে আসবে ব্যান্ড ‘আর্টসেল’।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় আছেন জুলহাজ্জ জুবায়ের ও সারা আলম।

শিল্পকলা একাডেমি জানিয়েছে, আসরের আজান ও নামাজের বিরতির পর জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টায় ‘আমরা করবো জয়’ গানটি পরিবেশন করবে বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আয়োজন করা হবে বিশেষ ড্রোন ড্রামা শো ‘ডু ইউ মিস মি?’। ড্রামাটি লিখেছেন ‘দ্যা অ্যানোনিমাস’। বাংলাদেশ ও চীন সরকার যৌথভাবে এই ‘ড্রোন শো’-তে প্রায় ২ হাজার ড্রোন উড্ডয়নের মাধ্যমে জুলাইয়ের গল্প তুলে ধরবে।

২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া ছাত্রদের আন্দোলন শেষমেশ সরকার উৎখাতের ইতিহাস পড়ে।

৩৬ দিনের সেই আন্দোলনে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন সাড়ে ১৫ বছর দোর্দণ্ড প্রতাপে দেশ চালিয়ে আসা শেখ হাসিনা।

শুরুতে এই আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পরে তা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

সরকারের তরফে জবাব ছিল- গুলি, টিয়ারশেল আর লাঠি; এককথায় কেবলই বলপ্রয়োগ। প্রথমে ফেইসবুক, পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায় সরকার। তাতে হিতে বিপরীত হয়।

আন্দোলনে রক্তপাত শুরু হওয়ার ২০ দিনের মধ্যেই লাশ আর রক্তের বোঝা মাথায় নিয়ে পতন হয় দেড় দশকের আওয়ামী লীগ সরকারের। হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা আর তার অমাত্যরা।

৫ অগাস্ট সরকার পতনের পর ৮ অগাস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর দাবি মেনে শুরু হয় রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে দেশে সরকারি ছুটি পালিত হচ্ছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ