
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: ভাড়া বাসা ছেড়ে বাবার বাড়িতে ফিরছিলেন এক দম্পতি। পূর্ব পরিচিত দুই ব্যক্তির মাধ্যমে বাসার সকল আসবাবপত্র ৪টি অটোভ্যান যোগে পাঠিয়ে দেন। এবং তারা সিএনজি অটোরিকশা যোগে রওনা দেন।
বাবার বাড়িতে পৌছার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও আসবাবপত্র বোঝায় অটোভ্যান আর পৌঁছাইনি। দম্পতি বুঝতে পারেন তারা প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন।
ভুক্তভোগী দম্পতি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ কিছু মালামালসহ প্রমাণ পায়। প্রতারকদের সাথে কথাও হয়। কিছু দামি মালামাল বিক্রি করার কথা স্বীকারও করেন অভিযুক্তরা। তবে কোনো মালামাল উদ্ধার হয়নি। এমনকি কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের আজকাল শুনতে শুনতে পেরিয়ে গেছে কয়েক মাস। থানার ওসি ও এসআই বদলি হয়েছে। সেই সাথে চাপা পড়ে গেছে অভিযোগও। এরপর থানায় এলেন নতুন ওসি। এবার নতুন ওসির নিকট দম্পতির একই অভিযোগ। আবারও তদন্তে গেলেন পুলিশ। প্রতারক চক্র চম্পট। প্রতারকদের পক্ষে থানায় এলেন তাদের বাবা। সাথে এলেন সাবেক স্থানীয় ইউপি সদস্য। থানায় বসে বাদীর সহিত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার আসবাপপত্র মাত্র ৪০ হাজার টাকায় মীমাংসা করেন। প্রথম মাসে বিশ হাজার, পরের মাস থেকে দশ হাজার টাকা করে পরিশোধ করবে মর্মে অঙ্গীকার করেন প্রতারকদের বাবা। দায়িত্ব নেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য। তবে প্রথম মাসের নির্ধারিত তারিখ এলে আবারো ১৫ দিনের সময় নেন। এবার তাদের নেয়া ২য় তারিখও পেরিয়ে গেছে, প্রতারক চোরদের বাবা আর ধরা দিচ্ছেন না।
ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার সদর ইউনিয়নে। এই ঘটনায় থানায় দিতীয় বারের মত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সম্পা খাতুন।
তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ছোট ডেড়াহাল গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে। এই ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের টেকর গ্রামের মো. বিপুলের দুই ছেলে সাজ্জাদ ও হারুন।
অভিযোগে বলা হয়, বগুড়ার শেরপুরের ভাড়া বাসা ছেড়ে নন্দীগ্রাম উপজেলায় বাবার বাড়িতে ফিরছিলেন সম্পা খাতুন। টিভি-ফ্রিজ সহ বাসার সকল আসবাবপত্র ৪টি ভ্যানে পূর্ব পরিচিত সাজ্জাদ ও হারুনের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেন । এরপর থেকে আসবাবপত্র বোঝায় ভ্যানের আর সন্ধান মিলেনি। কথা হয় মাধ্যম সাজ্জাদ ও হারুনের সাথে।
তারা বলেন, কাল সকালে পৌছে যাবে। এরপর থেকে ৮ মাস পেরিয়ে গেছে। অভিযুক্তরা আসবাপত্র ফেরত দিচ্ছে না। এমনকি ক্ষতিপূরনও দিচ্ছে না।
ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী সম্পা খাতুন বলেন, আমার বাবার বাড়িতে অভিযুক্ত সাজ্জাদ ও হারুনের যাতায়াত ছিল। আমি তাদের ভাই ডাকতাম। আমার আর্থিক সংকটের কথাও বলেছিলাম। সেই সাথে বাবার বাড়িতে নেওয়ার পর কিছু দামি আসবাবপত্র বিক্রি করে দেওয়ার কথাও হয়েছিল। তারা আমার সকল আসবাবপত্র উধাও করে দিল। থানায় অভিযোগ দিলাম প্রতিকার পেলাম না। এরপর দিতীয় বার থানায় অভিযোগ দিলাম। তবে এবার থানায় ৪০ হাজার টাকায় আপস হয়েছে। আপসের পর ২টি তারিখ পেরিয়ে গেছে ক্ষতিপূরণের টাকা দিচ্ছেনা। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে এরকমি চলছে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহনে প্রতারক পরিবারের গড়িমশি।
বিষয়টি নিয়ে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াহিদ বলেন, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ৪০ হাজার টাকায় বাদী ও বিবাদী মিমাংসা হয়েছিল। এরপর ২টি তারিখ পেরিয়ে গেছে বিবাদী ধরা দিচ্ছেনা। বিষয়টি ওসি স্যারকে অবগত করা হয়।