
আল জোবায়ের, স্টাফ রিপোর্টার: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাজেট পেয়েছে মোট ১৩১ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ১৪ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা বেশি।গত অর্থবছরে মোট বাজেট ছিল ১১৭ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৬ লক্ষ টাকা, যা মোট বাজেটের ০.০৪৫ শতাংশ। প্রায় সাড়ে ১২ হাজার শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য এই বাজেটকে অপ্রতুল বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের হাবিপ্রবিতে মোট ১৩১ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকার বাজেটের মধ্যে ইউজিসি দেবে ১২২ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে আসবে ৯ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। এই বাজেটে স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.২৮ শতাংশ। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের অগ্রগতির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এই বরাদ্দকেও ‘অপ্রতুল’ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা।
হাবিপ্রবিতে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। অথচ তাদের জন্য বাৎসরিক স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৬ লক্ষ টাকা, যা মোট বাজেটের ০.০৪৫ শতাংশ। যদিও গতবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে এ খাতে বরাদ্দ সামান্য বেড়েছে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনের তুলনায় এটি অত্যন্ত কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাজেটের সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন খাতে। এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৩ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা, যা মোট বাজেটের ৬৩.১৭ শতাংশ। এর মধ্যে বেতন-ভাতা বাবদ ৭৮ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা এবং পেনশন ও গ্র্যাচুইটি বাবদ ৪ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা।
তবে এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্যখাতে দেওয়া বরাদ্দ নিয়ে। যদিও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৫ লক্ষ টাকা। চলতি বছরে তা ১ লক্ষ টাকা বাড়িয়ে ৬ লক্ষ হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মতে, এই সামান্য বৃদ্ধি প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম । এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের সংস্কারের জন্য মানববন্ধন করে কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। তারপরেও স্বাস্থ্যখাতে এতো কম বরাদ্দে মেডিকেল সেন্টারটির সংস্কার আদৌ হবে কিনা এমন প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে একটি অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায়, বর্তমানে মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েই চলছে মেডিকেল সেন্টারের রোগী আনা-নেয়ার কাজ। তাছাড়াও মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকা, গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ না থাকার অভিযোগও এসেছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে।
বাজেটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “আমরা বাজেট যেভাবে যেমন বাজেট চাই, সে রকম আসলে পাই না। এ বছর আমরা বাজেট চেয়েছিলাম প্রায় ১৬৯ কোটি টাকা। এর প্রেক্ষিতে ইউজিসি থেকে পেয়েছি ১২২ কোটি টাকার বাজেট। তবে আমরা আশাবাদী সামনে সংশোধিত বাজেটে এটা আরো বাড়বে। বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে ইউজিসির নির্দেশনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য বিবেচনায় নেওয়া হয়।’