
যায়যায়কাল ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির জন্য বিদেশি দক্ষ কর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয় এইচ-১বি ভিসা ফি বাড়িয়ে বছরে ১ লাখ ডলার করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
একই সঙ্গে ১ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ‘গোল্ড কার্ড’ নামের একটি আবাসিকতা কর্মসূচিরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এইচ-১বি ভিসা পাওয়া ব্যয়বহুল হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের আদেশ অনুযায়ী, রোববার থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে এইচ-১বি ভিসার আবেদন করবেন, তাদের জন্য এই ফি প্রযোজ্য হবে। তবে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি চাইলে কোনো ব্যক্তি, নির্দিষ্ট কোম্পানি বা পুরো শিল্প খাতকে এই ফি থেকে অব্যাহতি দিতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে ফি বৃদ্ধির আদেশটি এক বছরের জন্য কার্যকর থাকবে, যদিও ট্রাম্প এর মেয়াদ বাড়াতে পারবেন।
শুক্রবার এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘মূল কথা হলো, আমরা চাই দারুণ মানুষেরা এখানে আসুক এবং তারা এর জন্য অর্থ পরিশোধ করুক।’
এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও কম্পিউটার প্রোগ্রামারের মতো বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ দেয়। ভারত ও চীন থেকে যেসব দক্ষ কর্মী দেশটিতে কাজ করেন তাদের অনেকেই এই ভিসার মাধ্যমে যান। প্রাথমিকভাবে তিন বছরের জন্য এই ভিসা দেওয়া হলেও পরে তা ছয় বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়।
যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে ৮৫ হাজার এইচ-১বি ভিসা দিয়ে থাকে। এর প্রায় তিন-চতুর্থাংশই পান ভারতীয় নাগরিকেরা। বড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলো ভারতীয় কর্মীদের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, যারা হয় যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে কাজ করেন অথবা দুই দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করেন।
ট্রাম্পের সাবেক মিত্র ইলন মাস্কসহ প্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তারা এর আগে এইচ-১বি ভিসার ব্যাপারে বলেছিলেন, প্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পূরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যথেষ্ট সংখ্যক মেধাবী কর্মী নেই।
তবে ট্রাম্পের সঙ্গে ওভাল অফিসে থাকা বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, ‘সব বড় কোম্পানিই এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে আছে।’
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদ থেকেই এইচ-১বি ভিসার রাশ টানার চেষ্টা করে আসছেন। যোগ্যতার শর্তে পরিবর্তন আনায় আগেরবার আইনি চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়েছিলেন তিনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এইচ-১বি ভিসার আবেদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে ২০২২ সালে ভিসা অনুমোদনের সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ।
এর বিপরীতে, ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৪ লাখ এইচ-১বি ভিসা অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই ছিল নবায়নের আবেদন।
একই দিনে ট্রাম্প আরেকটি আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যার মাধ্যমে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগকারী ব্যক্তি বা ২০ লাখ ডলার বিনিয়োগকারী করপোরেট পৃষ্ঠপোষকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুততম সময়ে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ তৈরি হবে।