
মো: রমিজ আলী, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও আংশিক পাহাড়তলী-আকবর শাহ্) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনী উত্তাপ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর থেকেই গ্রাম- মহল্লায়, হাট-বাজার, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পর্যন্ত সর্বত্রই চলছে ভোটের আলোচনা ও বিশ্লেষণ। কে হতে যাচ্ছে আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এমপি?
সীতাকুণ্ডের আসনটিতে রয়েছে একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়ন। এই আসনটিতে ভোটার সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার। টানা তিনটি জাতীয় নির্বাচন-২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪-একতরফা নির্বাচন হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত সাধারণ ভোটাররা। যার কারণে এবার সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় আশাবাদী ও অতি উৎসাহী হয়ে আছে।
এই আসন পুনরুদ্ধারে মাঠে রয়েছেন বিএনপি মনোনীত একক প্রার্থি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী। তিনি স্বৈরাচার শাসন আমলে দীর্ঘ প্রায় নয় বছর কারাবন্দি থাকা নির্যাতিত নেতা।
আসলাম চৌধুরী বলেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৭ বছর দলের দুঃসময়েও নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। তৃণমূলের ভালোবাসা ও আমার স্বচ্ছ ভাবমূর্তিই আমার আসল শক্তি। চট্টগ্রাম-৪ আসনকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলবো। বিজয়ী হলে কৃষি উন্নয়ন, তরুণ প্রজন্ম কে কর্মসংস্থান ও তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নে কাজ করবো, ইনশাআল্লাহ্।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি’র প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ইতিমধ্যে দলটি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজিমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের হক আদায়ে কাজ করবো। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলাব্যাপী গ্রাম মহল্লায় ব্যাপক হারে গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। তবে আনোয়ার সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে কিছু বিতর্কও রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সীতাকুণ্ড প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে উপজেলা জামায়াত ও বিএনপি অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতাকর্মী সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। নবনির্বাচিত কমিটিকে স্বাগত জানান। নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। পরবর্তী ৭ ফেব্রুয়ারি তার নির্দেশে কয়েকজন পরাজিত প্রার্থী বহিরাগতদের নিয়ে প্রেস ক্লাব দখলের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বাধা দিতে গেলে নবনির্বাচিত সভাপতি সৈয়দ ফোরকান আবু সহ বিভিন্ন সাংবাদিকদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয় বলে জানা যায়। পরে নবনির্বাচিত কমিটি প্রেস ক্লাব পুনরুদ্ধার করে।
এ ঘটনায় আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীর বড় ভাই আতাউর রহমান খসরুর জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ার সিদ্দিকী বলেন, আমি কেন দখলের নির্দেশ দেব? এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র আমার বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রাম-৪ আসনে ভোটারদের অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের অবস্থান ও দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘিরে নির্বাচনী অঙ্গন ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তবে সীতাকুণ্ডবাসীর মুখে এখন একটাই প্রশ্ন-এবার কি তারা সত্যিই তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে?