মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

অন্তঃসত্ত্বা বিউটিশিয়ানকে ধর্ষণকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, দুই জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শুক্রাবাদে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক বিউটিশিয়ানকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. রিয়াদ (২৪) ও ইয়াছিন হোসেন ওরফে সিয়াম (২৩)।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী বিউটিশিয়ান অনলাইনে একটি পেজ খুলে বাসায় গিয়ে সেবা দিয়ে থাকেন। এ সুযোগে ফেসিয়াল করার সেবা চেয়ে বাসায় ডেকে নিয়ে ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণে জড়িত দুজনই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বখে যাওয়া শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী তরুণী তাদের পূর্বপরিচিত নয়, ফ্যান্টাসি থেকেই ওই তরুণীকে বাসায় ডেকে নেয় তারা।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।

ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার তরুণী (২৫) পেশায় একজন বিউটিশিয়ান। আগে বিউটি পার্লারে কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় তিনি করোনা পরবর্তী সময়ে সেবা দেওয়ার সুবিধার্থে ফেসবুকে নিজের একটি পেজ খোলেন। তার কাছ থেকে এর আগে সেবা নেওয়া পরিচিত এবং অনলাইনে যোগাযোগ করা নারীরা তার প্রধান সেবাগ্রহীতা।

গত ১১ অক্টোবর বিকেলে ফোনে তেমনই একটি সেবা প্রদানের (ফেসিয়াল) অনুরোধ পান তিনি। তাসলিমা নামের এক নারী ফোনকলটি করছিলেন বলে ভুক্তভোগী তরুণী পুলিশকে জানান। ওইদিনই তিনি সাভার থেকে সেবা দেওয়ার জন্য শুক্রাবাদ এলাকায় আসেন।

পথে তাসলিমার ভাই পরিচয়ে গ্রেফতার রিয়াদ ফোনে বেশ কয়েকবার তার সঙ্গে কথা বলেন। সন্ধ্যায় শুক্রাবাদ এলাকায় পৌঁছালে রিয়াদ ওই তরুণীকে তাদের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী, কিছুক্ষণ পর সিয়াম ও জিতু নামে তার আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে ঘরে ঢোকেন রিয়াদ। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা একে একে ভুক্তভোগী তরুণীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ভুক্তভোগীকে পাশবিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। ধর্ষণ শেষে তারা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে পথে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে তার স্বামী ভুক্তভোগীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার থেকে প্রথমে বিষয়টি ধানমণ্ডি থানাকে জানানো হলে, থানা ঘটনাস্থল তাদের আওতাধীন না হওয়ায় বিষয়টি শেরেবাংলা নগর থানাকে বুঝিয়ে দেয়।

ডিসি বলেন, ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযানে নামে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঢাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় রিয়াদ ও সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত রিয়াদ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সিয়াম তার বন্ধু। জড়িতদের আরেক বন্ধুকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনলাইন ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ধরনের ঘটনা অনেকটাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে। বাসা বাড়িতে যে কোনো সার্ভিস দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহক এবং সেবাদানকারী ব্যক্তিদের আরও সতর্ক হতে হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ