বৃহস্পতিবার, ১৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

আন্দোলনে কপালে গুলিবিদ্ধ আব্দুল্লাহকে বাঁচানো গেল না

মো. মহসিন উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার: গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিন গত ৫ আগস্ট মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন।

আবদুল্লাহ (২৩) নামের ওই শিক্ষার্থী ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়তেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানান আবদুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার।

আবদুল্লাহর মরদেহ ময়নাতদেন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আব্দুল জব্বার জানান, ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন তাঁতীবাজার এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাগরিবের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে আবদুল্লাহর মরদেহ গ্রামের বাড়ি যশোরে নিয়ে যাওয়া হবে।

জানা গেছে, বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আব্দুল্লাহ। আন্দোলনের শুরু থেকেই সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তৃতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী।

আব্দুল্লাহর সহপাঠীরা জানান, তার কপালের মাঝ বরাবর গুলি লেগেছিল। গুলিবিদ্ধ হওয়া স্থানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। অল্পের জন্য ব্রেন রক্ষা পায়। এমন অবস্থায় প্রায় দুই-তিন ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে ছিলেন আব্দুল্লাহ। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অপারেশনের পর ডাক্তাররা তাকে আশ্বস্ত করেন সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে। দুইদিন পর তাকে রিলিজ দিলে বাসায় চলে যান।

আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা জানান, যশোরে যাওয়ার পর ব্যথা বাড়লে আবার ঢাকা মেডিকেলে আনা হয়। চিকিৎসকরা মাথায় ভেতরে ইনফেকশন হয়েছে বলে জানায়। ঢামেকে ফের অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না দেখে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সহযোগিতায় তাকে ২২ আগস্ট সিএমএইচে স্থানান্তরিত করা হয়।

তারা আরও জানান, সিএমএইচে আব্দুল্লাহর প্রথম অবস্থায় উন্নতি দেখা গেলেও কিছুদিন পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হয়। ইর্ন্টানাল ব্লিডিংয়ের কারণে তার মাথায় ‘ব্লাড ইনফেকশন’ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তবে নিম্নবিত্ত পরিবার সেই ব্যবস্থা করতে পারেনি। অবশেষে তিনি না ফেরার দেশের যাত্রী হলেন।

আব্দুল্লাহর বাবা কৃষিকাজের পাশাপাশি একটি দোকান চালাতেন। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবা-মা ছাড়াও তিনি ভাই এক বোন আছে তার। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান ছিলেন আব্দুল্লাহ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *