কেফায়েতুল্লাহ কায়সার, চট্টগ্রাম ব্যুরো: বৃদ্ধাশ্রম। শব্দটি শুনতে বেশ নিদারুণ। তবে এটাই এখন বাস্তবতা। শব্দটি বৃদ্ধদের আশ্রম হিসেবে পরিচিত হলেও সমাজে এখন এটি নিজ সন্তান কর্তৃক বিতাড়িত বৃদ্ধ পিতা-মাতার অশ্রুঝরা আশ্রয়স্থল। যেখানে দিনের পর দিন মৃত্যুর প্রহর গুণে জুয়েলের মত ছেলেদের পিতা-মাতারা। আর অন্তীম জীবনের শেষ ক্ষণ পর্যন্ত অশ্রুসজল চোখে দিনাতিপাত করে আলেয়ারা।আবার কখনো দেখা যায় দো’হাত তুলে স্রষ্টার কাছে করেন হাজার মিনতি।
তবে কি নিয়ে কথা বলেন সন্তান কর্তৃক বিতাড়িত ৭০ বছরের আলেয়ারা। মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে, সেটা হয়তো অজানা। কিন্তু তাদের ফ্যাল ফ্যাল চোখের চাহনি যেন জানান দেয় পাহাড়সম কষ্টের নিরব চোখগুলো।
চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার অক্সিজেন শীতল ঝর্ণা আবাসিক এলাকায় মাওলানা গোলামুর রহমান রব্বানীর প্রতিষ্ঠিত বেওয়ারিশ মানবসেবা বৃদ্ধাশ্রমে কথা হয় লক্ষ্মীপুরের ৭০ বছেরের বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের সাথে। ২০২১ সালে নগরীর নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে পবিত্র রমজানের এক অন্ধকার রজনীতে রাস্তার পাশ থেকে তাকে আশ্রমে নিয়ে আসেন গোলামুর।
আলেয়ার ছেলে জুয়েল কক্সবাজারে নামি-দামি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার স্ত্রীর প্ররোচনায় তাকে রাস্তার পাশে ফেলে যায় বলে আলেয়া বেগম জানান। তবে ক্যামেরার সামনে আলেয়াকে শুধু কাঁদতে দেখা যায়।
আলেয়া বেগম ছাড়াও মাওলানার বেওয়ারিশ মানবসেবা বৃদ্ধাশ্রমে আজকের দিন পর্যন্ত আশ্রমে আছেন ৪২ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ। এদের সেবায় গোলামুর রহমানের রয়েছে ৮ জন সেবক।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা বলেন, রাস্তার পাশে কিছু মানুষের অসহায় জীবন দেখে ২০২১ সালে মানবসেবার ব্রত নিয়ে নগরির বাকলিয়া কালামিয়া বাজার এলাকায় আশ্রমটি শুরু করি। বর্তমানে প্রবাসী ইউসুফ আহমদের তত্ত্বাবধানে ও আবাম ফাউন্ডেশনের সভাপতি সামছুল আলম খান মুরাদের সহযোগিতায় ৫ কাঠা জায়গায় পরিকল্পিত আশ্রম হিসেবে অসহায় বৃদ্ধ মানুষের সেবা দিয়ে আসছি। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে এটি পরিচালনা আরো সহজ হত বলে গোলামুর রহামন মনে করেন। তিনি সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাশা করেন।