রবিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

কথা না শুনলে হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ: ট্রাম্প প্রশাসন

যায়যায়কাল ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জানিয়েছে, প্রশাসনের কথা মতো কাজ না করলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে আর কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভিসা সংক্রান্ত তথ্য না দেওয়া হলে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সক্ষমতা হারাবে হার্ভার্ড—এমন হুমকি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এর আগে বুধবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের সচিব ক্রিস্টি নোয়েম ঘোষণা দেন, হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দকৃত ২৭ লাখ ডলারের দুইটি অনুদান বাতিল করা হয়েছে।

নোয়েম জানিয়েছেন, তিনি হার্ভার্ডকে চিঠি দিয়ে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে হার্ভার্ডের কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ওই শিক্ষার্থীরা ‘অবৈধ ও সহিংস কার্যক্রমের’ সঙ্গে জড়িত।

নোয়েম এক বিবৃতিতে জানান, হার্ভার্ড যদি প্রশাসনের চাহিদা মতো সম্পূর্ণ তথ্য জমা না দিতে পারে, তাহলে তারা বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সক্ষমতা হারাবে।

হার্ভার্ডের মুখপাত্র জানান, বিশ্ববিদ্যালয় নোয়েমের ‘অনুদান বাতিল ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা যাচাই-বাছাই’ সংক্রান্ত চিঠির বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছে।

মুখপাত্র জানান, এ সপ্তাহের শুরুতে হার্ভার্ডের দেওয়া বিবৃতিতেই তারা স্থির থাকতে চান। সেখানে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়টি ‘নিজেদের স্বাধীনতা আত্মসমর্পণ করবে না বা সাংবিধানিক অধিকার ত্যাগ করবে না’।

তবে তারা আইন মেনে চলার কথাও জানিয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র বাহিনী হামাস হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ব্যক্তিকে হত্যা ও ২৫০ ব্যক্তিকে অপহরণ করে। এই ঘটনার পর গাজায় ইসরায়েল প্রতিহিংসামূলক ও নির্বিচার হামলা শুরু করে, যা আজও চলছে।

ইসরায়েলের এসব হামলার প্রতিবাদে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েলি বিরোধী ও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দানা বেঁধে ওঠে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই এসব আন্দোলন স্তিমিত হয়ে পড়ে।

তা সত্ত্বেও, ট্রাম্প প্রশাসন ক্যাম্পাসের এসব বিক্ষোভ-সূত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলেছে, যার মধ্যে আছে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদান বন্ধসহ আরও কঠোর ব্যবস্থা। এই ধারার সর্বশেষ উদাহরণ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী বন্ধের হুমকি।

ট্রাম্প ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রতি হুমকি হিসেবে দেখেন। তিনি তাদেরকে ইহুদিবিদ্বেষী ও হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবে চিত্রায়িত করেছেন একাধিকবার।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ন্যায্য আন্দোলন ও গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক কার্যক্রমের প্রতিবাদকে ভুল করে উগ্রবাদ ও ইহুদিবিদ্বেষ হিসেবে প্রচার করছে। ইহুদিদের কয়েকটি সংগঠনও এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসন বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন বিদেশি শিক্ষার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ও অনেকের ভিসা বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে।

নোয়েম দাবি করেন, হার্ভার্ডে ‘আমেরিকা-বিরোধী ও হামাসপন্থি চিন্তাধারার’ অস্তিত্ব রয়েছে।

এর আগে হার্ভার্ড জানিয়েছে, তারা ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ ও অন্য যেকোনো ধরনের উগ্রতা দূর করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তবে তারা মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও প্রতিবাদ জানানোর অধিকার লঙ্ঘন হয়, এমন কোনো উদ্যোগ নেবে না বলে জানিয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ