
আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা: সকালবেলা গোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙিনায় উৎসবের আমেজ। শিক্ষার্থীরা বই হাতে উচ্ছ্বসিত, শিক্ষকেরা সেজেছেন পরিচ্ছন্ন পোশাকে। কারণ, সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমীন আসছেন আজ।
মঙ্গলবার তিনি কলারোয়া উপজেলার গোপীনাথপুর, যুগিখালী ও বামনখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের বাংলা ও ইংরেজি পড়ার দক্ষতা যাচাই করেন তিনি। বিদ্যালয়ের শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। “তুমি কি ইংরেজি পড়তে পারো?” এমন প্রশ্নে তৃতীয় শ্রেণির রাফি অনায়াসে পাঠ্যবই থেকে পড়তে শুরু করে। পাশে থাকা শিক্ষক হাসেন গর্বে।
শিক্ষার্থীদের সাবলীল পাঠদক্ষতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে রুহুল আমীন বলেন, “শিক্ষকদের আন্তরিক পরিশ্রমেই শেখার আনন্দ ফিরে এসেছে। শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠছে-এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন।”
তবে শিক্ষার উজ্জ্বল চিত্রের আড়ালে রয়েছে কিছু কষ্টের বাস্তবতা। গোপীনাথপুর ও যুগিখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লকের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
এক শিক্ষিকা বলেন, “টয়লেটের অভাবে প্রতিদিনই অসুবিধায় পড়তে হয়, বিশেষ করে মেয়েশিশুদের।”
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশ্বাস দেন, বিষয়টি তিনি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে অবহিত করবেন। গ্রামীণ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো নানা সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকরা সামান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়েই শিশুমন গঠনে নিরলস পরিশ্রম করছেন।
এই পরিদর্শন শুধু বিদ্যালয়ের কাজ পর্যালোচনা নয়-এটি ছিল শিক্ষার মানোন্নয়ন, অবকাঠামোগত ঘাটতি এবং প্রশাসনিক দায়িত্ববোধের বাস্তব প্রতিফলন। বিদ্যালয়ে শিক্ষা অফিসারের আগমেন শিশুরা ফিরে পেল নতুন উদ্দীপনা। তাদের চোখে শেখার আলো, আশার দীপ্তি। কিন্তু সেই আলো আরও উজ্জ্বল করতে দরকার একটি সাধারণ জিনিস-একটি কার্যকর শৌচাগার।
পরিদর্শনকালে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আনিসুর রহমান।