
জিয়াউল হক (খোকন), নিজেস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিককে বিয়ে করার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের এক নারীকে চাকুরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে কুমারখালীর চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ’র বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিকট লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী মীম খাতুন (২৩)।
মীম চরসাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের সাংবাদিক মিজানুর রহমানের স্ত্রী। তাঁর স্বামী কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের আলো পত্রিকার কুমারখালী প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মীম খাতুন ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ বছরের জন্য চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের নারী উদ্যোক্তা হিসেবে চেয়ারম্যানের সাথে লিখিত চুক্তিবদ্ধ হন। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত উক্ত পরিষদের উদ্যোক্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। গত ১৬ই ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে সাংবাদিক মিজানুর রহমানের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। গত ২৯ ডিসরম্বর তাঁর বিয়ের খবর চেয়ারম্যানের কানে পৌছায় এবং চেয়ারম্যান নতুন বছরের এক জানুয়ারি তাকে মৌখিকভাবে চাকুরিচ্যুত করে পরিষদ থেকে বের করে দেন।
আরো জানা যায়, মীম তাঁর উদ্যোক্তার চাকুরি ফিরে পেতে স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যানকে একাধিক ধরাধরি করেছেন। তবুও চেয়ারম্যান তাকে পরিষদে প্রবেশ করতে দেননি। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মীম খাতুন বলেন, চেয়ারম্যানের সাথে তাঁর পাঁচ বছরের লিখিত চুক্তি রয়েছেন। হঠাৎ সাংবাদিক মিজানকে বিয়ের খবর শুনে এক জানুয়ারি থেকে চেয়ারম্যান সাহেব কোনো নোটিশ ছাড়ায় তাকে চাকুরিচ্যুত করেছেন। আইন অমান্য করে ও চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার তাকে চাকুরিচ্যুত করার ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
মীমের স্বামী সাংবাদিক মিজানুর বলেন, তিনি সম্প্রতি চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ’র বিরুদ্ধে পরিষদের ভিজিএফ চাল চুরির সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। সংবাদ প্রকাশের পর চেয়ারম্যান ছেলে ও কতিপয় মস্তান তাঁর উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল। এঘটনায় কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জেরেই মূলত চেয়ারম্যান তাঁর স্ত্রীকে পরিষদে রাখতে চাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে চরসাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেছের আলী খাঁ বলেন, তাঁর সমস্যা হচ্ছে, তাই তিনি মীমকে চাকরি থেকে বাদ দিয়েছেন। তাতে কার কি সমস্যা হচ্ছে? বলে ফোনটি কেটে দেন। পরবর্তীতে কয়েকবার কল দিলেও তিনি আর তা গ্রহণ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, পরিষদের কোনো উদ্যোক্তাকে বাদ দিতে হলে প্রশাসনকে জানিয়ে প্রথমে শোকজ নোটিশ করতে হয়। চেয়ারম্যান ইচ্ছে করলেই এভাবে কাউকে বাদ দিতে পারেন না। দুপুরে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান তিনি।