মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

গাজা যুদ্ধে গণহত্যা ছাড়া কোনো অর্জন নেই ইসরায়েলের

যায়যায়কাল ডেস্ক: সাত অক্টোবর, ২০২৩। ইসরায়েলের ভিতরে ঢুকে হামলা চালিয়ে এক হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস, ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এর আগেই হামাসকে জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ অনেক দেশ।

প্রতিশোধ নিতে সেদিনই গাজা আক্রমণ করে ইসরায়েল । তারপর থেকে দুই বছর কেটে গেছে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে গত দুই বছরে ইসরায়েলি সেনার আক্রমণে ৬৭ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। নিহতদের ৮০ শতাংশই বেসামরিক মানুষ। আহত হয়েছেন কম করে হলেও এক লাখ ৬৯ হাজার মানুষ।

ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন জানিয়েছে, গাজায় ৯০ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাজার মোট ২১ লাখ বাসিন্দাদের মধ্যে ১৯ লাখ ঘরছাড়া হয়েছেন। ইসরায়েল তাদের অনুমতি ছাড়া গাজায় কোনো ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না। যার ফলে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৫০ শিশুসহ মোট ৪৫০ জন অনাহার-অপুষ্টিতে মারা গেছেন।

স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, এই দুই বছরের যুদ্ধে ইসরায়েলের অর্জন কী?

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছিলেন, দুইটি লক্ষ্য নিয়ে তিনি যুদ্ধে নেমেছেন। এক, সব জিম্মিকে মুক্ত করবেন এবং দুই, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করবেন।

দুই বছর পেরিয়ে গেলেও ওই দুইটি লক্ষ্যের কোনোটিই তিনি পুরোপুরি পূরণ করতে পারেননি।

২৫১ জিম্মির মধ্যে ১৪৮ জন জীবিত অবস্থায় ইসরায়েল ফিরেছেন। বেশ কিছু মৃত জিম্মির মরদেহও ইসরায়েলে এসেছে।

তবে এখনো ৪৮ জন জিম্মি হামাসের কাছে আছে। তার মধ্যে ২০ জন বেঁচে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

গত দুই বছরে ইসমাইল হানিয়া, সিনওয়ারের মতো প্রথম সারির হামাস নেতাসহ অসংখ্য হামাস কর্মী মারা গেছেন। তা সত্ত্বেও হামাস এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তিচুক্তি মানলে হামাস আর সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিসাবে কাজ করতে পারবে না।

গত দুই বছরে ইসরায়েলের লড়াই শুধু গাজায় সীমাবদ্ধ ছিল না। ইয়েমেনের হুতি ও লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গেও হয়েছে। ইসরায়েলের বিমান বাহিনী ইরানে পরমাণু প্রকল্পের উপর লাগাতার বোমাবর্ষণ করেছে।

সিরিয়ায় বাশার আসাদের শাসন শেষ হওয়ায় ইরান দীর্ঘদিনের এক মিত্রকে হারিয়েছে।

হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহও ইসরায়েলের আক্রমণে মারা গেছেন।

গত দুই বছরে ইসরায়েলের সেনা গাজায় হাসপাতাল, ত্রাণশিবির ও স্কুলে বোমা ফেলেছে। যার ফলে প্রচুর নারী ও শিশু মারা গেছে। অসংখ্য সাংবাদিক, ত্রাণকর্মী ও উদ্ধারকারী কর্মীও মারা গেছেন।

ইসরায়েল গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দেয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর জেনোসাইড স্কলারস, বি সেলেম ও ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের মতো ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনগুলি অভিযোগ করেছে, ফিলিস্তিনে ইসরায়েল গণহত্যা করছে।

নেতানিয়াহুর সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এ ধরনের অভিযোগের বিপরীতে কোনো তথ্যপ্রমাণ নেই। তারা আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ