
আতিকুর রহমান, কুড়িগ্রাম উত্তর: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র একজন করে শিক্ষক দিয়ে চলছে সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। এতে পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠান দুটির এই বেহাল অবস্থা থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
জানা যায়, উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চিলমারী ইউনিয়নের মন্তোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটিতে যথাক্রমে ৬ জন ও ৫ জন করে শিক্ষকের পদ রয়েছে।
দক্ষিণ নটরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়তে ৬ পদের বিপরীতে শিক্ষক ছিলেন ৫ জন। যার মধ্যে ১ জন শিক্ষক চাকুরি ছেড়ে চলে যান এবং পর্যায়ক্রমে প্রধান শিক্ষক ও দুই সহকারী শিক্ষক(সফিকুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন) বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যান। ফলে রোজিনা খাতুন নামে এক সহকারী শিক্ষক কর্মরত আছে। তিনিই ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ১২৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করান।
অপরদিকে চিলমারী ইউনিয়নে অবস্থিত মন্তোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১ জন চাকরি ছেড়ে চলে যান, এক জন সিএনএডে প্রশিক্ষণের জন্য যান এবং মো. জিয়াউল ইসলামসহ দুই শিক্ষক অন্যত্র বদলি হয়ে গেলে যায়। ফলে প্রধান শিক্ষক উপেন্দ্র নাথ দাস একাই কর্মরত রয়েছেন। তিনি একাই সব শ্রেণি মিলে ৫৭ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চালিয়ে যান।
স্কুল দুটির হাজিরা খাতা অনুযায়ী দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২৮ জন এবং মন্তোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৫৭ জন। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠান দুটির এই বেহাল অবস্থা থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
বুধবার দক্ষিণ নটারকান্দি স্কুলের সব ক্লাস মিলে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২২ জন এবং মন্তোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ জন দেখা গেছে।
দক্ষিণ নটারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছাঃ রোজিনা খাতুন বর্তমানে একাই সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি জানান, বিদ্যালয়ের সকল দরজা-জানালা খোলা এবং বন্ধ করার কাজ থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান পর্যন্ত সকল কাজ একাই করে থাকেন তিনি। স্কুলটি শিক্ষক সংকটের কারনে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের পাশ্ববর্তী মাদ্রাসায় ভর্তি করাচ্ছেন বলে জানান তিনি। স্কুলের নিকটবর্তী শিক্ষককে সংযুক্তির জন্য অফিসে বলেছেন বলে জানান তিনি।
সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয় দুটিতে শিক্ষক সংযুক্তির জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রুত শিক্ষক সংযুক্তি দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে ওই স্কুল দুটির শিক্ষকরা বদলির জন্য আবেদন করলে প্রতিস্থাপন স্বাপেক্ষে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছিল। ফলে ওই দুই বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষক বদলি হতে পারেনি। হঠাৎ করে প্রতিস্থাপনের শর্তটি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি হলে তারা অন্যত্র চলে যান। এতে বিদ্যালয় দুটির পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হতে থাকে। প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে শিক্ষক সংযুক্তি দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.মিনহাজুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।












