মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তালায় বিস্ময়কর বেগুন গাছ, দেখতে মানুষের ভিড়

বি এম বাবলুর রহমান, তালা: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাঝিয়ারা গ্রামে জন্ম নিয়েছে এক বিস্ময়কর বেগুন গাছ। দৈর্ঘ্য প্রায় ১০-১২ হাত। যা সাধারণত মানুষের চোখে দেখা প্রচলিত বেগুন গাছের থেকে কয়েকগুণ বেশি।

শুধু দৈর্ঘ্যেই নয়, গাছটির বিশেষত্ব হলো এর প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় থোকায় থোকায় ঝুলছে সবল ও টাটকা বেগুন।

এই অস্বাভাবিক কিন্তু প্রাকৃতিক দৃশ্যটি এখন শুধু মাঝিয়ারা গ্রামেই নয়, আশপাশের গ্রাম ও বাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ আসছেন মাঝিয়ারায়। কেউ গাছটি দেখতে, কেউ ছবি তুলতে। অনেকে আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করছেন। এতে গাছটির খবর আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় বাজারে চায়ের দোকানেও এখন আলোচনার প্রধান বিষয় এই বেগুন গাছ।

গাছটির মালিক স্থানীয় কৃষক মাঝিয়ারা গ্রামের জয়নুদ্দিন সরদার জানান, ১৪ মাস আগে তিনি শ্যাওলা(শিলা) জাতের বেগুনের চারা রোপণ করেন। সেগুলোর মধ্যে একটি গাছ অস্বাভাবিকভাবে লম্বা হতে শুরু করে। তিনি নিয়মিত পানি দিতেন, গাছের গোড়ায় সামান্য জৈব সার ব্যবহার করতেন। এর বাইরে বিশেষ কোনো বাড়তি পরিচর্যা করেননি।

কৃষক বলেন, “আমি তো সাধারণ কৃষক। বেগুন চাষ করি সংসারের খরচ চালানোর জন্য। কিন্তু এই গাছ আমাকে অবাক করেছে। প্রতিদিন সকাল-বিকেল গাছটা দেখি আর মনে হয়, এ যেন আল্লাহর এক বিশেষ দান।” এখন মানুষ ভিড় জমায় শুধু গাছটা দেখার জন্য। কেউ ছবি তোলে, কেউ আবার দূর থেকে ভিডিও করে নিয়ে যায়। এতে আমাদেরও আনন্দ হচ্ছে।”

প্রতিবেশী কৃষক মজিদ সরদার বলেন, “আমি জীবনে বহু বেগুন চাষ করতে দেখেছি। কিন্তু ১০-১২ ফুট লম্বা গাছ তো কখনও শুনিনি। ঠোকায় ঠোকায় বেগুন ধরেছে। এটা একেবারেই আশ্চর্য।”

শিশুরা গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে মোবাইল ফোনে ছবি তুলছে, আবার কেউ গাছের পাশে দাঁড়িয়ে হাত প্রসারিত করে মাপ নেওয়ার চেষ্টা করছে। যেন পুরো গ্রাম একটি অদ্ভুত আনন্দে ভাসছে।

তালা উপজেলা কৃষি অফিসার হাজিরা খাতুন জানান, সঠিক জাতের বীজ, উর্বর মাটি, অনুকূল আবহাওয়া এবং যথাযথ পরিচর্যার কারণে এ ধরনের গাছ গজাতে পারে। তবে এত লম্বা বেগুন গাছ এ অঞ্চলে একেবারেই বিরল।

একজন কৃষি কর্মকর্তা বলেন,“এটি কৃষির এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। গবেষণা করলে জানা যেতে পারে কেন গাছটি এত লম্বা হয়েছে। ভবিষ্যতে এই জাত নিয়ে কাজ করলে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।”

মানুষ এটিকে ‘অলৌকিক’ বলছে। কেউ এটিকে প্রকৃতির খেয়াল বলছে, আবার কেউ আধুনিক কৃষি বিজ্ঞানের সাফল্য হিসেবে দেখছেন। গ্রামীণ সমাজে এমন বিরল কোনো কিছু ঘটলেই তা মানুষের কৌতূহল বাড়ায়। মাঝিয়ারার এই বেগুন গাছ এখন স্থানীয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। কৃষক পরিবারটির কাছে এটি যেমন এক বিশেষ নিয়ামত, তেমনি গবেষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের জন্যও এটি ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ