মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

দিনাজপুরে প্রবীণ সাংবাদিককে ফের হুমকি, আতঙ্কে পরিবার

খান মো. আঃ মজিদ, দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার নাফানগর ইউনিয়নের বড় সুলতানপুর গুচ্ছগ্রাম আবাসন এলাকার হাজারো অপরাধে জড়িত ইউপি সদস্য মিরা কাশ্মীরি প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল মজিদ খানকে ফের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মিরা কাশ্মীরি ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিক মজিদ খানের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে পুরো এলাকাজুড়ে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সূত্র জানায়, সিআর মামলা নং ৯০১/২৪-এর তদন্ত কর্মকর্তা দিনাজপুর পিবিআই-এর এসআই মহাসিন মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে ৩ নং আসামি মিরা কাশ্মীরি ও ২ নং আসামি আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরীকে বাঁচাতে মামলার ধারা পরিবর্তন করে হালকা করেন। এর ফলে ৩ নং আসামি মিরা কাশ্মীরি গত ২৯ মে এবং ২ নং আসামি মালেক ৪ জুন জামিনে মুক্তি পান।

এর মাত্র চার দিন পর, গত ৮ জুন বিকেল ৫:৩০ মিনিটের দিকে সাংবাদিক মজিদ খানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায় মিরা কাশ্মীরির লেলিয়ে দেওয়া পোষা বাহিনী। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বোচাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।

এই ঘটনার পর ১৭ জুন সাংবাদিক মজিদ খান দিনাজপুর আমলী আদালতে আটজনকে আসামি করে ছয় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ২১৪৭/২৫)। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, মিরা কাশ্মীরি (৪০), তার স্বামী আব্দুল আলিম (৪৫), সহযোগী আব্দুল মালেক ওরফে চৌধুরী (৫৫), রাসেল খান (২২) ও আরও কয়েকজন মিলে একটি অপরাধ চক্র গড়ে তুলেছে। তারা স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।

রাসেল খান, যিনি সিআর মামলা নং ৬৯/২৫-এ ২২ মে জামিনে মুক্তি পান, তার অবৈধ স্ত্রী আর্জিনা আলোসহ মিরা কাশ্মীরির ষড়যন্ত্রে সক্রিয়ভাবে যুক্ত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও, তিনটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি লাইছুর রহমান (৫৩), তার স্ত্রী লিপি আক্তার এবং কন্যা আশা আক্তারকে রক্ষার জন্য এই চক্র মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রবীণ সাংবাদিক মজিদ খান যেহেতু এসব মামলার বাদী, তাই তাকেই টার্গেট করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একাধিক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এতে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে — পুলিশ কেন নিরব? গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের ধরা হচ্ছে না কেন?

অনেকেই মনে করছেন, তদন্ত কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। তারা দাবি করছেন, অবিলম্বে এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সাংবাদিক মজিদ খান ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী ও সচেতন নাগরিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত আইনি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ