বৃহস্পতিবার, ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

নরসিংদী জনশক্তি অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী : নরসিংদী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে স্থানীয় দালালদের দৌরাত্ম্যে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বিদেশগামী যুবকরা। সংঘবদ্ধ দালাল চক্ররা প্রভাবশালী হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যাচ্ছে না। অথচ পাশেই বিজ্ঞ আদালত কোর্ট প্রাঙ্গন হওয়ায় সত্ত্বেও দালালরা তা তোয়াক্কা না করে বিদেশগামী যুবকদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অর্থ।

অফিসের কর্মচারীরা দালালদের কথা স্বীকার করলেও, নিজেদের সীমাবদ্ধতা এবং প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততাকে দায়ী করেছেন জেলার জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহকারী পরিচালক। তিনি আরো জানান, অফিসের বাহিরে দালাল চক্র বিদেশগামী যুবকদের হয়রানী করে কিন্তুু আমার অফিসের ভিতর আমি কোন দালালকে প্রশ্রয় দিই না।

নরসিংদীর শিবপুর থেকে শাহ আলম অভিযোগ করে জানান, বিদেশ যাবার স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের দুয়ারে। দালালদের হাতে প্রতারিত হয়ে ৩ দিনেও দিতে পারেননি ফিঙ্গারপ্রিন্ট। একই অবস্থা জেলার রায়পুরা উপজেলাসহ৬টি উপজেলা থেকে আসা শত শত যুবকের। দিনে দিনে যে কাজ করা সম্ভব, দালালদের খপ্পরে পড়ে ২-৩ দিনেও পাচ্ছেন না তার দেখা। অফিস সহকারীদের যোগসাজশেই দালালরা এভাবে প্রতারিত করছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

ভুক্তভোগীরা আরো জানান, টাকা না দিলে ভেতরেই ঢোকা যায় না। টাকাটা অফিসের লোকে না বাইরের লোকে নিচ্ছে বলেও জানান তারা। পুলিশ আসলে এই দালাল চক্র গা ঢাকা দিলেও পুলিশ চলে গেলেই আবারও চলে আসে। অভিযোগ অস্বীকার করে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত কারণকেই বিলম্বের জন্য দায়ী করলেন অফিস সহকারীরা। দালালদের বিষয়ে কিছু না জানলেও নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে নিলেন জেলা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সহকারী পরিচালক। তিনি বলেন, ইন্টারনেট, সার্ভার, বিদ্যুত এগুলো সব যখন ঠিক হয়ে যাবে তখন কাজটা সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু কাজটা একেবারেই সম্প্রতি চালু হয়েছে সেজন্য যে ধরনের সার্ভিস দেয়া দরকার তা পুরোদমে আমরা দিতে পারছি না। তবে আশা করছি, কিছু দিনের মধ্যে আমরা এটি ঠিক করে ফেলতে পারব।

এদিকে আজ সোমবার এই অফিসে প্রতিবেদক গেলে রেমিট্যান্স যোদ্ধা মো. বিল্লাল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এখানে আমরা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসলে যাদের কন্ট্রাক্ট ফর্ম নেই তাদের ২/৩ হাজার টাকা দিতে হয়। যারা টাকা দেয় তাদের ফিংগারপ্রিন্ট কন্ট্রাক্ট ফর্ম ছাড়াই হয়ে যায়। অন্যদিকে যারা এই টাকা না দেয় তাদেরকে বিভিন্নভাবে ঘুরানো হয়। এই অফিসে ৪০/৫০ জন দালাল রয়েছে। অথচ অফিস কর্তৃপক্ষ যেন দেখেও না দেখার ভান করে আছে।

এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক জানান, এই অফিসে অসংখ্যা দালাল রয়েছে। মাঝেমধ্যে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হলেও দালালদের একেবারে নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, বিদেশগামী নাগরিকরা সরাসরি আমাদের নিকট আসলে হয়রানী হবে না। একটি সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড রয়েছে অফিসের সামনে।

এদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি মো. আইনুল মিয়া সংবাদকর্মীদের জানায়, এই জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে প্রকাশ্যে দালালদের দৌরাত্ম যেন বেড়েই চলছে। তাই এ বিষয়ে আইনের প্রয়োগ জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ