মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: নীলফামারীতে আগাম সেভেন জাতের আলু তোলা শুরু করেছেন কৃষকরা। আলু উৎপাদনে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা বরাবরই সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছে। এবার আলুর দাম ভালো পেয়ে খুশি এ উপজেলার কৃষকরা। মাঠেই নতুন আলু ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান আলু চাষিরা।
বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ উপজেলা রনচন্ডী ইউনিয়নের কুঠিয়াল পাড়া গ্রামে আগাম আলু তুলতে দেখা গেছে। আগাম সেভেন জাতের আলু রোপণের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে তোলা যায় । এ অঞ্চলে চাষ হওয়া আলু স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠে কেউ মাটি খুঁড়ছেন, কেউ কুড়াচ্ছেন। কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছেন। আবার কেউ ডিজিটাল মিটারে ওজন পরিমাপের কাজ করছেন। পরে সেখান থেকে আলুগুলো ভর্তি হচ্ছে গাড়িতে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে।
জানা গেছে, প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষক আগাম আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার ধরার আশায় আগেভাগে আলুর বীজ বপন করেন। বর্তমানে সেই খেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বাড়তি ঝামেলা ছাড়াই খেত থেকেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কয়েকদিনের মধ্যে সব মাঠ থেকে আলু উত্তোলন শুরু হবে। চলতি বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আলু চাষি আনারুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও ৫৫ থেকে ৬০ দিনে ফলনযোগ্য আগাম আলু উত্তোলন করছি। আগাম হিসেবে ফলন কিছুটা কম হলেও বাড়তি খরচ ছাড়াই খেত থেকেই আলু ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি।
আরেক চাষি আকবর হোসেন বলেন, আগাম আলু রোপণ করেছিলাম। এতে খরচ বাদ দিয়ে মোটামুটি ভালো লাভ হবে। মাঠেই কেজি প্রতি ৯০ টাকা পাইকারের কাছে বিক্রি করলাম।
আলুর পাইকার মাসুদ রানা বলেন, প্রতি বছর এখান থেকে আগাম আলু কিনে রাজশাহী, বগুড়া ও ঢাকায় বিক্রি করি। এখান থেকে আগাম আলু কিনে ঢাকায় বিক্রি করলে বর্তমান বাজারে যাতায়াত খরচ গিয়ে মোটামুটি লাভ হবে আশা করছি।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লোকমান আলম বলেন, প্রতি বছর এ উপজেলার কৃষকরা আগাম সেভেন জাতের আলু চাষ করে থাকেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। এ বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম আলু ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর। এবারে কৃষকরা ৯০ টাকা কেজি দরে আগাম আলু বিক্রি করছেন।